ঢাকা: বহু বছর ধরে ল্যাবরেটরিতে নির্ঘুম রাত কাটিয়েও দূরারোগ্য ক্যান্সারের তেমন কার্যকরী প্রতিরোধক বা প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেননি চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। অথচ এই অসাধ্য সাধন করবেন নাকি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ওহিয়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি গবেষণায় দেখেছেন, মহাবিশ্বের বিস্ময় কৃষ্ণগহ্বর এবং নক্ষত্রগুলোর মধ্যে কীভাবে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানের উদগীরণ এবং বিকিরণের শোষণ ঘটছে। তারা ওষুধ বিশেষজ্ঞ এবং বিকিরণ দিয়ে টিউমার চিকিৎসার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে মিলে নতুন ধরনের একটি বিকিরণ চিকিৎসা উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন যা টিউমারের জন্য বেশ ধ্বংসাত্মক কিন্তু স্বাভাবিক টিস্যুর জন্য খুবই কোমল আচরণ করবে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, নির্দিষ্ট শক্তির রঞ্জনরশ্মির (এক্সরে) মধ্যে লোহার মতো ভারী ধাতুগুলো নিম্ন শক্তি সম্পন্ন ইলেক্ট্রন নিঃসরণ করতে পারে।
এই পর্যবেক্ষণ থেকে এমন একটি সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গোলো যা, নির্দিষ্ট কিছু ধাতু থেকে নিঃসরিত এ ধরনের বিকিরণ টিউমার ধ্বংসে কাজে লাগাতে পারবেন চিকিৎসকরা। এভাবে সুস্থ টিস্যুগুলোর কোনো ক্ষতি হবে না। বর্তমানে বিকিরণের মাধ্যমে যে ক্যান্সার চিকিৎসা করা হয় তাতে সুস্থ টিস্যুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ওহিয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সুলতানা নাহার বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, টিউমারের মধ্যে থাকা ন্যানোপার্টিকেলগুলো নির্দিষ্ট ফ্রিকুয়েন্সির মধ্যে রঞ্জনরশ্মি খুব কার্যকরভাবে শোষণ করতে পারে। এর ফলে যে ইলেক্ট্রনের নিঃসরণ ঘটবে তা আক্রান্ত কোষগুলো ধ্বংস করবে। ’
তবে এ কৌশল খুব সাবধানতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে। এতে খুব সুক্ষè এবং নির্দিষ্ট ফ্রিকুয়েন্সির এক্সরে (রঞ্জনরশ্মি) ব্যবহার করতে হবে বলে জানান গবেষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী অনীল প্রধান বলেন, মৌলিক পদার্থ বিজ্ঞানের আলোকে চিকিৎসায় বিকিরণের ব্যবহার খুবই বাছবিচারহীনভাবে করা হচ্ছে। তবে বাস্তবিকপক্ষে ১৮৯০ সালে রন্টজেনের আবিষ্কারের পর থেকে এক্সরে এর মৌলিক কোনো উন্নতি সাধিত হয়নি।
হাসপাতালে ব্যবহৃত সাধারণ এক্সরে মেশিনগুলো পূর্ণবর্ণালীর এক্সরে উৎপাদন করে। এখন এই সুক্ষè ফ্রিকুয়েন্সির এক্সরে তৈরির কৌশল হাসপাতালে ব্যবহার করা যাবে। এতে করে রোগীর বিকিরণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১১