ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বেনজিরের সঙ্গে আমার প্রেম ছিল না: ইমরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১১
বেনজিরের সঙ্গে আমার প্রেম ছিল না: ইমরান

ইসলামাবাদ: বেনজির ভুট্টোর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছেন ইমরান খান।

বেনজির ভুট্টোর সঙ্গে তার নিছক বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল বলে নতুন জীবনীতে দাবি করেছেন এই সাবেক হার্টথ্রব ক্রিকেটার ও রাজনীতিক ইমরান খান।



ইমরান তার ভারতীয় জীবনী লেখক ফ্র্যাঙ্ক হুজুরকে বলেন, ‘আমার এক চাচাত ভাই ভুট্টোর ব্যাপারে খুবই আগ্রহী ছিল। পরে তিনিও (ভুট্টো) তার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। একদিক থেকে দেখলে, বিয়ের একটা সম্ভাবনা এখান থেকেই দেখা দিয়েছিল। ’

ইমরান খান বর্তমানে পাকিস্তানে তেহরিক-ই-ইনসাফ নামে একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বেনজির ভুট্টোকে শুধুই ব্যক্তিগত বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এখানে দু’জনের মধ্যে কোনো ‘মুগ্ধতার’ ব্যাপার ছিল না বলে দাবি করেন তিনি। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে ভুট্টোর সঙ্গে তার একটা সম্পর্ক ছিল বলে জানান ইমরান।

‘ইমরান ভার্সাস ইমরান’ নামের বইটিতে হুজুর ইমরানকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, ‘তিনি (ভুট্টো) পরামর্শের জন্য আমার দৃষ্টিভঙ্গিকে বিশ্বাস করতেন। রাজনীতি তার ধাতে ছিল না কিন্তু তিনি রাজনীতিকে নিজের করে নিতে পেরেছিলেন। তিনি পাকিস্তানের জন্য এক মহান বার্তাবাহক হতে পারতেন। ’

ভুট্টোর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে ইমরান খান বলেন, ‘সাবলীলভাবে কথা বলার সহজাত বৈশিষ্ট্য ছিলো তার। সমুচিত জবাব দেওয়ার ক্ষমতা সবার মধ্যে থাকে না। কিন্তু বেনজিরের মধ্যে সে ক্ষমতা ছিল। তার স্ফটিক স্বচ্ছ চাহনিতে তিনি গভীরভাবে প্রভাব ফেলতে পারতেন। তিনি সব সময় একটা দায়িত্বশীল জায়গায় থাকতে চাইতেন। ’

এর প্রায় দুই বছর আগে ইমরানের অপর এক জীবনী লেখক ক্রিস্টোফার স্যান্ডফোর্ড দাবি করেছিলেন, ১৯৭০ সালের দিকে অক্সোফোর্ডে সহপাঠী থাকা অবস্থায় ভুট্টো ইমরানের প্রেমে মোহাবিষ্ট হয়ে পড়েন। এক সময় এই জুটি পরস্পরের খুব ঘনিষ্ট হয়ে পড়ে। এমনকি খুব সম্ভবত তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক হয়ে থাকতে পারে।

ক্রিস্টোফার স্যান্ডফোর্ড আরও দাবি করেন, ইমরানের মা তাদের বিয়ের আয়োজন করার বহু চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন।

নতুন জীবনী ‘ইমরান ভার্সাস ইমরানে‘ ইমরান খান বলেছেন, ‘যখন বেনজির পাকিস্তানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তখন আমার মনে হলো ক্ষমতার রাজনীতির এ নোংরা খেলায় আমি আমার এক বন্ধুকে হারালাম। তবে আমি তার আত্মবিশ্বাস দেখে মুগ্ধ হই। ’

তিনি আরও বলেন, ‘বাবার রাজনৈতিক হত্যার ব্যাপারে তিনি বন্ধুদের কাছে প্রায়ই গর্ব করতেন। আমাদের কেউ কেউ অবশ্য তার এ গর্ব দেখে হাসাহাসি করতাম। কিন্তু তিনি বেশ উচ্ছলতার সঙ্গে আমাদের সঙ্গ দিতেন। ’

ইমরান বলেন, ‘অক্সোফোর্ডে বিতর্ক অনুষ্ঠানে তিনি মানবাধিকারের লঙ্ঘন, আইনের শাসন, লিঙ্গ সমতা, বৈষম্য এবং অর্থ কেলেঙ্কারি ইস্যুগুলো নিয়ে খুব সরব ছিলেন। কিন্তু যখন ক্ষমতার ময়দানে নিজেকে আবিষ্কার করলেন তখন নিজেকে লালসা এবং আত্মকেন্দ্রীক রাজনৈতিক ছাঁচে পরিবর্তন করে নিলেন। তিনি ক্ষমতার স্বাদ নিলেন আর এতেই বিভোর হয়ে থাকলেন। ’

পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর মেয়ে বেনজির ভুট্টো রাওয়ালপিন্ডিতে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে নিহত হন। বহুদিন নির্বাসনে থাকার পর পিপিপির চেয়ারম্যান হিসেবে সেদিন নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের ওই গ্যারিসন শহরে গিয়েছিলেন বেনজির।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।