ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

৮% ভোটে হেরে যাবেন ওবামা!

জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১১
৮% ভোটে হেরে যাবেন ওবামা!

প্রিন্সটন: দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারছেন না বারাক ওবামা। সম্প্রতি পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে, আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকানদলীয় প্রার্থী ৮ শতাংশ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী জরিপসংস্থা গ্যালোপ সম্প্রতি এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, আসন্ন ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটাররা ওবামার চেয়ে রিপাবলিকান প্রার্থীকেই বেশি পছন্দ করছেন।

জরিপে অংশ নেওয়া ভোটারদের মধ্যে ৩৯ শতাংশ ব্যক্তি বারাক ওবামাকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে চান। আর ৪৭ শতাংশ ভোটার রিপাবলিকান প্রার্থীকে বেছে নিয়েছেন।

জরিপটি পরিচালনা করা হয় ৭ থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত। জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে টেলিফোন বা সেলফোনে কথা বলে তাদের অভিমত নেওয়া হয়।

গ্যালোপের এ জরিপ ফলাফল ওবামার দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পথে একটি অশনি সংকেত বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

জরিপে দেখা যাচ্ছে, গত ২ মে আল কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পর ওই মাসে ওবামার জনপ্রিয়তা অনেক বেড়ে যায়। তবে এর পরের দুই মাসে এ জনপ্রিয়তার সূচক নিম্নমুখী হতে থাকে।

গ্যালোপ বরাবরই কোনো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনের মাত্র এক বছর আগে মতামত জরিপ করে থাকে। তখনও অবশ্য তার প্রতিদ্বন্দ্বী অজানা থাকে। এর আগে ১৯৯১-৯২ সালে সিনিয়র জর্জ বুশ এবং ২০০৩-০৪ সালে জুনিয়র জর্জ বুশের সময়ও তারা এমন জরিপ করেছিল।

১৯৯১ সালে সিনিয়র বুশ তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রাটদের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু ১৯৯২ সালের প্রথম দিকেই তিনি জনপ্রিয়তা হারাতে থাকেন এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে হেরেও যান।

একইভাবে জুনিয়র বুশ ২০০৩ সালে জনপ্রিয়তায় খুব সামান্যই এগিয়ে ছিলেন। ২০০৪ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে জিতলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে তার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়।

সেই হিসেবে নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে এরকম জরিপ খুব একটা নির্ভরযোগ্য ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে না। এক বছরের মধ্যে এমনকি নির্বাচনের খুব কাছকাছি সময়েও জনগণের মতামত পাল্টে যেতে পারে।

দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার আগের বছর সিনিয়র ও জুনিয়র বুশ উভয়েই দেশে চাকরির ক্ষেত্র সৃষ্টিতে ব্যাপক আকারে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিক দিয়ে ওবামা অনেক পিছিয়ে আছেন।

১৯৯১ সালে জুলাইয়ে সিনিয়র বুশ সরকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ ছিল গড়ে ৭১ শতাংশ, জুনিয়র বুশের সময়ে ২০০৩ সালে এটা ছিল ৬০ শতাংশ। অথচ সর্বশেষ গত সপ্তাহে ওবামার এই অংক মাত্র ৪৬ শতাংশ।

গ্যালোপ জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে ফলাফল বারাক ওবামার পক্ষে না যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যেমন ১৯৯১ সালের জরিপে সিনিয়র বুশ নিশ্চিভাবে জিতে যাচ্ছেন এমন কথা বলা হলেও তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হতে পারেননি।
 
আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওবামার ভাগ্য নির্ধারণ করবে মূলত রিপাবলিকান পার্টি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কেমন প্রার্থী মনোনয়ন দিচ্ছে, ওবামার তুলনায় ব্যক্তি হিসেবে তার ভাবমূর্তি, জনগণের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা এবং আবেদন সৃষ্টি করার মতো কারিশমা রয়েছে কি না তাও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
 
জানা যাচ্ছে, আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি থেকে মিট রমনি মনোনয়ন পেতে পারেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে আমেরিকানদের মধ্যে তার ব্যাপারে খুব একটা ইতিবাচক মনোভাব দেখা যায়নি।
 
ওবামার দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়া না হওয়া আরও একটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে। আর তা হলো জাতির সামগ্রিক অবস্থা। এই মুহূর্তে আমেরিকানরা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট নয়। দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি অনেকটাই নড়বড়ে।

অবশ্য নির্বাচন হতে এখনও ১৬ মাস বাকি। জনগণের মনোভাব পরিবর্তন বা রাজনৈতক পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য এটা নিঃসন্দেহে অনেক সময়। সঠিকভাবে ওবামার ভাগ্য নির্ধারণের জন্য এটা অনেক বেশি দীর্ঘ সময়।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।