১৭ জুলাইয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে সোমবার (১৯ জুন) সংসদীয় পরিষদের সভা ডাকে বিজেপি। তার আগে তারা জোটের দল, এমনকি বিরোধী দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অংশ নেন বিজেপির প্রেসিডেন্ট অমিত শাহ, শীর্ষ নেতা ও মন্ত্রী রাজনাথ সিং, অরুণ জেটলি, ভেঙ্কাইয়া নাইডু, সুষমা স্বরাজ ও নিতিন গড়করি। সভা শেষে অমিত শাহ প্রেসিডেন্ট পদে তাদের জোটের প্রার্থী হিসেবে রামনাথের নাম ঘোষণা করেন।
অমিত শাহ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এনডিএ জোটের মনোনীত প্রার্থী হচ্ছেন রামনাথ কোবিন্দ। তিনি সবসময় দলিত এবং অন্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কাজ করেছেন। ’
এনডিএ জোটের সিদ্ধান্তের আগে এ বিষয়ে বিরোধী দল কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আলাপ করেছেন জানিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘কংগ্রেস এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে অবস্থান জানাবে। ’
আগামী ২২ জুন কংগ্রেসের সংসদীয় বোর্ডের সভা হবে। সেখানে তারা সিদ্ধান্ত নেবে, নতুন কাউকে প্রার্থী করবে নাকি এনডিএ জোটের প্রার্থীকেই সমর্থন দেবে। বাঙালি রাজনীতিক প্রণব মুখার্জির প্রেসিডেন্ট পদে মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৫ জুলাই। তার আগে ১৭ জুলাই নির্বাচনের সূচি ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সূচি অনুযায়ী, ২৮ জুনের মধ্যে মনোনয়ন জমা দিতে হবে। নির্বাচনে একের অধিক প্রার্থী মনোনয়ন দিলে ভোট হবে ১৭ জুলাই। ভোট গণনা হবে ২০ জুলাই। তারপরই ঘোষণা হবে ফলাফল।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটার দেশটির জাতীয় সংসদের উভয়কক্ষের (লোকসভা ও রাজ্যসভা) সদস্যরা। দিল্লি ও পুডুচেরির মতো রাজ্য বা কেন্দ্রনিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোর বিধানসভার সদস্যরাও সাংবিধানিকভাবে এই ভোটাধিকার ভোগ করেন। সাধারণত ওই লোকসভা, রাজ্যসভা বা বিধানসভার সদস্যরা তাদের দল বা জোট সমর্থিত প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে থাকেন।
এনডিএ জোট লোকসভা, রাজ্যসভা ও বিধানসভায় অন্যদের চেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় তাদের প্রার্থীই ভোটে জিতে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আর যদি বিরোধী দলগুলোও এনডিএ প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে দেয়, তবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৮ জুনেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে, এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি ভারতের ১ নম্বর কর্তার আসনে পরবর্তী পাঁচ বছরের দায়িত্বশীলের ব্যাপারে।
নির্বাচনের আলোচনা শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রণব মুখার্জির ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে খবর আসছিলো, তাকে নির্বাচন ছাড়া দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব দেওয়া হলে প্রণব ‘না’ করবেন না। কিন্তু লোকসভা ও রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট এ নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নেওয়ায় প্রণব আর মনোনয়ন নেবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রামনাথের পরিচয়
৭১ বছর বয়সী রামনাথ উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা তীরবর্তী কানপুরের দলিত নেতা। পেশায় আইনজীবী রামনাথ দু’দুবার উত্তর প্রদেশ থেকে বিজেপির রাজনীতিক হিসেবে রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট তাকে বিহারের গভর্নর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৯ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৭
এইচএ/