রোহিঙ্গারা জাতিগতভাবে অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন মন্তব্য করে নাজিব রাজাক বলেন, মায়ানমারে তাদের নিরাপত্তা নেই, নির্বিচারে তারা খুন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন।
শনিবার (০৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক অনুষ্ঠান শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মালয়েশিয়া প্রথম থেকেই এই নির্যাতনের বিরোধিতা করে আসছে বলে দাবি করেন তিনি।
রাজাক বলেন, তাদের প্রতি নির্যাতন ক্ষমার অযোগ্য। আসলে একটি পরিকল্পিত পদ্ধতিতে তারা (মায়ানমার সেনা) নির্যাতনগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিন লাখ ছাড়ালো রোহিঙ্গা জনস্রোত
তিনি উল্লেখ করেন, মালয়েশীয় বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে শনিবার সন্ধ্যায় রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। যাতে রয়েছে ৮৪ কার্টন খোরমা খেজুর, ৩০০ টিন গুঁড়ো দুধ, তিন হাজার কেজি চাল, ২০০ টিন বিস্কুট, সাবান, কাপড়, বিশুদ্ধ পানি, সাবান ও প্রসাধনী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবার ত্রাণ গেলো। এই বিশাল দুর্যোগ মোকাবেলায় সাহায্য যতোই লাগুক, আমরা দেওয়ার চেষ্টা করবো। রোহিঙ্গাদের সার্বিক দিক পরিদর্শনে একটি প্রতিনিধিদল সোমবারের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাতে পারে। এই টিমে রয়েছেন কূটনীতিক ও সেনা কর্মকর্তা।
এদিকে মালয়েশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী প্রধান বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট ক্যাম্পভিত্তিক ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হবে। সেখানে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া যেতে পারে।
ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে রাখাইন রাজ্যে যখন পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন। এই সংখ্যা এখন তিন লাখ ছাড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৭
আইএ