ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রাখাইনে তদন্ত চালাতে চায় জাতিসংঘ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
রাখাইনে তদন্ত চালাতে চায় জাতিসংঘ মিয়ানমারের রাখাইনে বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়েছে সেনারা, ছবি: দীপু মালাকার

মিয়ানমারের রাখাইনে অব্যাহত গণহত্যা ও সহিংসতার ঘটনার তদন্ত করতে চায় জাতিসংঘ। এ জন্য তারা রাজ্যে অবাধ প্রবেশাধিকারের জন্য দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির তথ্য অনুসন্ধান মিশনের তদন্তকারীদের পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকারকে পুনরায় চিন্তা করে দেখতেও বলেছে সংস্থাটির।



বিশ্ববাসীর ‘পর্যবেক্ষণ’কে ভয় পাই না: সু চি

জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসমান বলেছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব ঘটনা রাখাইনে ঘটছে এ বিষয়ে আমাদের নিজ চোখে দেখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য প্রয়োজন বিনা বাধায় সে দেশে প্রবেশের অধিকার।

রাখাইনে গুরুতর মানবিক সংকট চলমান উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে আমাদের জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।  

অভিযোগের বিষয়ে মিয়ানমার যে বিশ্বকে তথ্য দিচ্ছে না, তারও সমালোচনা করেন মারজুকি দারুসমান।

এর আগে সকালে রাখাইনে সহিংসতার প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মধ্যে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।  

এতে তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন, আনান কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশ মেনে নেওয়ার। পাশাপাশি রাখাইনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আমন্ত্রণ জানান তিনি।

তিনি এও বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কীভাবে গুরুত্ব দেওয়া যায়, ঠিক সেভাবেই তার সরকার কাজ করবে।

এছাড়া পরিচয় শনাক্ত করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সু চি বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। তবে বক্তব্যের কোথাও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দের ব্যবহার ঘটাননি। এ ব্যাপারে তিনি আগে থেকেই নাক উঁচু। তাদের রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রয়েছে অনীহা।

এদিকে রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত গণহত্যা ও নির্যাতন বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি চাপ বাড়াতে আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এইচআরডব্লিউ। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির পক্ষ থেকে বিবৃতিতে এটি জানানো হয়।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) বলছে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী পালিয়ে এসেছেন চার লাখ নয় হাজার। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। সহিংসতায় প্রাণ গেছে তিন হাজারের বেশি মানুষের। বেসরকারিভাবে এই সংখ্যা ১০ হাজার পার করেছে।

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে রাখাইনে যখন পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭/আপডেট ১৬১৬ ঘণ্টা
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।