বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তার প্রেসিডেন্টের এই আহ্বানের কথা জানিয়েছেন। তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম সংস্কার বিষয়ক এক সভায় বক্তৃতা করছিলেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতি অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে পেন্স এ সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে সমর্থনের কথা বলেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সমাধান না হলে এই সহিংসতা ওই অঞ্চল এবং আশপাশের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে।
সরকারি স্থাপনায় সন্ত্রাসীদের হামলার জবাবে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ভয়াবহ বর্বরতা ও গ্রামে গ্রামে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের দেশান্তরী করতে বাধ্য করার জন্য তাদের অভিযুক্ত করেন পেন্স।
তিনি শক্তিধর পাঁচ দেশের নিরাপত্তা পরিষদের ওই সভায় বলেন, এই সংকট সমাধানে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে বলিষ্ঠ ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও আমি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা একইসঙ্গে আহ্বান জানাচ্ছি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর এই প্রয়োজনের সময়ে তাদের আশা ও সাহায্য দেওয়ারও।
মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর নৃশংস অভিযান শুরুর পর এখন পর্যন্ত পেন্সের এই বক্তব্যই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তরফ থেকে বলিষ্ঠ ও স্পষ্ট কোনো বিবৃতি। গত ২৫ আগস্ট অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে রাখাইনের অর্ধেকেরও বেশি গ্রাম। বর্বরতার মুখে সোয়া ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। এই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ।
পেন্স মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই সহিংসতা এবং অসংখ্য শিশুসহ রোহিঙ্গাদের এই ‘ঐতিহাসিক প্রস্থান’কে ‘সবচেয়ে বড় দুঃখজনক ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেন।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, যদি সহিংসতা না থামানো হয়, তবে এটা ক্রমেই অবনতির দিকে যাবে এবং এই অঞ্চলের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে গ্রাস করবে। একইসঙ্গে এই সহিংসতা আমাদের সবার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে।
পেন্স বলেন, সহিংসতা ও এর শিকার মানুষদের যে চিত্র দেখা গেছে, তা আমেরিকান জনগণকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে। স্তম্ভিত করেছে সারাবিশ্বের সভ্যজনকে।
রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত নিতে মিয়ানমারের কোনো ভয় নেই বলে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি যে কথা বলেছেন, তাকেও স্বাগত জানান পেন্স।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
এইচএ/