রাজধানী হারারেতে তারা সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে চায়। যদিও এখনও নিশ্চিত নয় কী হতে যাচ্ছে দীর্ঘ কয়েক দশক ক্ষমতা ধরে রাখা নেতা রবার্ট মুগাবের।
ইতোমধ্যে পুরো বিষয়টিকে ‘ক্যু মনে হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)। সংগঠনটি দ্রুতই জিম্বাবুয়েকে সাংবিধানিক ধারায় নিতে আহ্বান জানিয়েছে।
ইউনিয়নটির প্রধান আলফা কোন্ড বলেছেন, কোনো ক্যু মানা হবে না। সেনাদের ব্যারাকে ফিরে যাওয়া প্রয়োজন।
তবে অভ্যুত্থান (ক্যু) করার কথা অস্বীকার করে যাচ্ছে জিম্বাবুয়ের সামরিক বাহিনী। যদিও অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি বহিষ্কৃত ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগবাকে (৭৫)।
জিম্বাবুয়ের বিরোধীদলের নেতা মর্গান সোভঙ্গিরাই বলেছেন, মুগাবেকে এখনই পদত্যাগ করা উচিত।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রচণ্ড চাপে থাকা মুগাবে নিজেই পদত্যাগ করবেন এবং শান্তিপূর্ণ কোনো পদক্ষেপে যাবেন।
বর্তমানে হারারের রাস্তা সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানের দখলে। তাদের টহল দিনে-রাতে সমানভাবেই অব্যাহত। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে সেনাবাহিনী ট্রাফিক নির্দেশনায়ও নেমে গেছে।
দেশটিতে অস্থিরতার সূত্রপাত ঘটনা মুগাবে নিজেই। গত সপ্তাহে স্ত্রীর পরমর্শে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাগবাকে বহিষ্কার করেন। সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ৭৫ বছর বসয়ী নানগাগবাকে ৯৩ বছর বয়সী মুগাবের উত্তরসূরী ধরা হচ্ছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্টের ৫২ বছর বয়সী স্ত্রী গ্রেসও চান ক্ষমতার স্বাদ। ২০১৮ সালে দেশটিতে ভোট হওয়ার কথা।
মুগাবের শাসনে দেশে শিক্ষার হার বাড়লেও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ দেশটির অর্থনীতির পতন অব্যাহত ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উন্নতির বদলে বিশৃঙ্খলা এবং ধস নামতে থাকে। মুগাবে শাসনে কোটিপতি হয়েছেন অনেকে। অন্যদিকে সমাজের বাকি অংশে দারিদ্র্য বাড়তে বাড়তে তীব্র খাদ্যাভাবে পৌঁছেছে।
এর মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকে ব্যাপকভাবে। ২০০৮ ও ২০০৯ সালে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এতো বেশি পরিমাণে নোট ছাপায় যে, জিম্বাবুয়ান ডলারের দাম অতিরিক্ত হারে কমে তীব্র মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়।
এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে ১৯৮০ সালে স্বাধীনতা পেলে মুগাবে জিম্বাবুয়ের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। ক’বছর প্রধানমন্ত্রী থাকলেও ১৯৮৭ থেকে তিনি আফ্রিকার দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৭
আইএ