ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

এবার সৌদি বাদশাহ বললেন, পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৭
এবার সৌদি বাদশাহ বললেন, পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ (ফাইল ছবি)

পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) ঘোষণার পর সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজও দেশটির অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কথা বলেছেন।

সৌদির একটি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ওআইসি ঘোষণার পর একই সুরে কথা বলেছেন বাদশাহ সালমান।

তিনি বলেন, ধর্মীয় সমস্যা হলেও একে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে।

স্বাধীন দেশ হিসেবে তাদের বৈধ অধিকার রয়েছে পূর্ব জেরুজালেমে।

এ সময় তিনি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথাও বলেন।

তুরস্কের বড় শহর ইস্তাম্বুলে বিশ্বের ইসলামী দেশগুলোর জোটের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের বিশেষ সম্মেলনে বাদশাহ উপস্থিত ছিলেন না। তবে সেখানে যৌথ ঘোষণায় বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর স্বীকৃতি আসে। যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিপরীতে নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প এর আগে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। এরপর দেশে দেশে শুরু হয় বিক্ষোভ, ট্রাম্পের নিন্দা জানান অনেক বিশ্বনেতা।

ট্রাম্পের সঙ্গে বাদশাহ সালমান ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মধ্যপ্রচ্যে বিভিন্ন স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তারা নানাভাবে একমতও। ইসরায়েলের প্রতি ট্রাম্পের স্বীকৃতির পর সৌদি ব্যাপারটিকে কীভাবে নেবে সেটিই দেখার ছিল বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মুখিয়ে ছিলেন।

এ বিষয়ে সম্মেলনে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, আমাদের এই অঞ্চলে কয়েকটি দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের খুব ভালো সম্পর্ক-সহযোগিতা। ফলে ফিলিস্তিনের ভাগ্য নির্ধারণ কঠিন হয়ে পড়ছে।

ওআইসির বর্তমান চেয়ার তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ডাকা সম্মেলেনে এসে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যুক্তরাষ্ট্রকে ধিক্কার জানান। বলেন, জেরুজালেম ফিলিস্তিনের রাজধানী আছে এবং সবসময়ই তা থাকবে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও ভাষণে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওই বৈরী সিদ্ধান্তের পর ওআইসি চুপ করে বসে থাকতে পারে না।

পৃথিবীর অন্যতম পবিত্র নগরীর মর্যাদা রয়েছে জেরুজালেমের। ছোট্ট একটি শহরকে ঘিরে তিন ধর্মের মানুষের আবেগ, স্মৃতি এবং ঐতিহ্য। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর শহরও জেরুজালেম। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা, ‘ওল্ড সিটি’ খ্যাত শহরটি বিভক্ত মুসলিম, ইহুদি, খ্রিস্টান ও আর্মেনীয় বসতিতে। এখানে রয়েছে এসব ধর্মের অনেক পবিত্র স্থাপনা। তাই এই নগরীর পবিত্রতা নিয়ে মতভেদ না থাকলেও নিয়ন্ত্রণের অধিকার নিয়ে আছে নানা বিতর্ক। আছে দফায় দফায় দখল, পুনর্দখল, ধ্বংস আর পুনর্নির্মাণের রক্তক্ষয়ী ইতিহাস। সবচেয়ে বেশি টানাপোড়েন পবিত্র ভূমিকে ঘিরে। চলমান ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের কেন্দ্র এ এলাকায় অবস্থিত ইসলামের তৃতীয় পবিত্র মসজিদ আল আকসা বা বায়তুল মোকাদ্দাসসহ মুসলিমদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

একই জায়গায় অবস্থিত ইহুদিদের পবিত্র ভূমিখ্যাত ‘টেম্পল মাউন্ট’ বা ‘ঈশ্বরের ঘর’। যা ‘কুব্বাত আস সাখরা’ নামে হিসেবে পরিচিত। টেম্পল মাউন্টকে ঘিরে থাকা ‘ওয়েস্টার্ন ওয়াল’ ইহুদিদের কাছে ‘পৃথিবীর ভিত্তিপ্রস্তর’ হিসেবে স্বীকৃত। এখানে নিয়মিত প্রার্থনায় অংশ নেন লাখো ইহুদি।  

যিশু খ্রিস্টের স্মৃতিবিজড়িত গির্জার কারণে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের কাছেও পবিত্রতার দিক থেকে সমান গুরুত্বপূর্ণ জেরুজালেম। খ্রিস্টানদের বিশ্বাস, এখানেই ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল যিশুকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।