ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

আইএসের হাতে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাস্ত্র!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
আইএসের হাতে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাস্ত্র! যুদ্ধক্ষেত্রে আইএসের দুই সদস্য। ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়া ও ইরাক-ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) যে অস্ত্রে যুদ্ধ করছে, তার প্রায় এক তৃতীয়াংশই যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের। সিরিয়া-ইরাকের যুদ্ধক্ষেত্রে রিয়াদ-ওয়াশিংটন তাদের মদতপুষ্ট পক্ষকে এই অস্ত্র সরবরাহ করলেও তা হাত বদল হয়ে চলে গেছে বর্বর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির হাতে।

এক জরিপ চালিয়ে এ তথ্যই দিয়েছে সমরাস্ত্র পর্যবেক্ষক সংস্থা কনফ্লিক্ট আর্মানেন্ট রিসার্চ (সিএআর)। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ২০০ পাতার এক প্রতিবেদনে জরিপের বিস্তারিত তুলে ধরে সিএআর।

জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের সরবরাহকৃত অস্ত্র আইএসের হাতে গিয়ে গোষ্ঠীটির সমরাস্ত্রের ‘শক্তি ও মান’কে আরও পোক্ত করেছে, যেটা এই যুদ্ধক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব রেখেছে।

ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের হাতে থাকা অস্ত্র ও এসবের উৎস সম্পর্কে তিন বছর ধরে মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বানানো যায়- এমন সরঞ্জামসহ যুদ্ধক্ষেত্রে ৪০ হাজার অস্ত্র পাওয়া গেছে।

সিএআর’র প্রতিবেদন মতে, কিছু অস্ত্র সিরিয়ার বিদ্রোহীদের জোটে ফাটল ধরিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে আইএস। কিছু অস্ত্র তারা লুট করেছে ইরাক ও সিরিয়ার সেনাবাহিনী থেকে। আর কিছু অস্ত্র আইএসের হাতে গেছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদবিরোধী বাহিনীগুলোর কাছ থেকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই বাহিনীগুলো সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রে লড়াই করছে।  

আসাদবিরোধী পক্ষকে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্র শেষ পর্যন্ত আইএসের হাতে পড়েছে- এমন অন্তত ১২টি ঘটনার প্রমাণ সিএআর পেয়েছে বলেও জানানো হয় প্রতিবেদনে। একটি ঘটনা উল্লেখ করে বলা হয়, ইউরোপীয় এক দেশ থেকে ট্যাঙ্কবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কিনে যুক্তরাষ্ট্র আসাদের বিদ্রোহীদের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু দুই মাসের মাথায়ই সেই ক্ষেপণাস্ত্র চলে যায় আইএসের হাতে।

আরব বসন্তের শুরু থেকেই শিয়াপন্থি বাশারের বিরোধিতায় বিদ্রোহীদের অস্ত্র-সরঞ্জামসহ সার্বিক রসদ যুগিয়ে আসছে সৌদি এবং যুক্তরাষ্ট্র। যদিও আসাদের পক্ষে রয়েছে রাশিয়া-ইরানসহ কয়েকটি পক্ষ।  

সিএআর তাদের প্রতিবেদনে জানায়, যেসব অস্ত্র আইএস এখন ব্যবহার করছে তার বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদির। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আইএসবিরোধী আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে।  

চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইরাকি সরকার আইএসের কবল থেকে তাদের সবশেষ শহর রাওয়া উদ্ধারের পর গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করে। এই সপ্তাহেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সিরিয়ায় তাদের একটি ঘাঁটি পরিদর্শনের পর সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়া আইএস-বিরোধী লড়াইয়ে নামার কথা বললেও বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাশার আল-আসাদকে রক্ষায়ই এতোদিন এখানে মাথা ঘামিয়েছে মস্কো।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।