ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ রবিউস সানি ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

দু’মাসেই রাখাইনের ৪০টি গ্রাম পুড়িয়েছে সেনাবাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:১৬, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
দু’মাসেই রাখাইনের ৪০টি গ্রাম পুড়িয়েছে সেনাবাহিনী হিউম্যান রাইট ওয়াচের তোলা স্যাটেলাইট ছবি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত দুইমাসে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, গত দুই মাসেই রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাজ্যটির প্রায় ৪০টি গ্রাম আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।   

স্যাটেলাইটে তোলা ছবি বিশ্লেষণের পর এ কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থা।  

বিবৃতিতে সংস্থাটি বলছে, চলতি বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে আরও ৪০টি গ্রামের ভবনসহ বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে।

২৫ আগস্টের পর রাখাইনে এ নিয়ে ৩৫৪টি গ্রাম আংশিক বা পুরোপুরি পুড়িয়ে দিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।  

‘এই সময়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে এসেছে। ’ 

বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, স্যাটেলাইট ছবিগুলো প্রমাণ করছে, এই ধ্বংসযজ্ঞ এমন সময়েও চালানো হয়েছে, যখন রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে মিয়ানমার। গত ২৩ নভেম্বর ওই সমঝোতা হয়।

‘কিন্তু ২৫ নভেম্বর রাখাইনের মংডুর কাছে মিয়াও মি চ্যাঙ গ্রামে আগুন আর ঘরবাড়ি ধ্বংসের ছবি তুলেছে স্যাটেলাইট। পরের এক সপ্তাহের মধ্যে চারটি গ্রামে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। ’

সংস্থাটির এশিয়ার বিষয়ক পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষরের সময়েও রাখাইন গ্রামে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ চালানো থেকে এটাই প্রমাণ হয়, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার এই প্রতিশ্রুতি স্রেফ একটি প্রচারণা। রোহিঙ্গা গ্রামগুলো ধ্বংসের যেসব অভিযোগ দেশটির সেনাবাহিনী অস্বীকার করে আসছে, সেটাই প্রমাণ করে দিচ্ছে এসব স্যাটেলাইট ছবি। ’

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের মংডু, বুথিডং আর রাথিডং শহরে আশেপাশের ১ হাজার গ্রামের ওপর স্যাটেলাইটের তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পেয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এ বছর আগস্ট মাসের শেষের দিকে রাখাইনে সামরিক অভিযান শুরুর পর এসব গ্রামে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়।

হিউম্যান রাইট ওয়াচ বলছে, সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫৪টি গ্রামের মধ্যে অন্তত ১১৮টি গ্রামে হামলা হয়েছে ৫ সেপ্টেম্বরের পর। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে ‘রাখাইনে অভিযানের সমাপ্তি’র ঘোষণা দেওয়ার পর এসব হামলা চালানো হয়।  

‘আগস্ট থেকে রাখাইনে শুরু করা এই অভিযানের সময় সেনাবাহিনী হত্যা, ধর্ষণ, গ্রেফতার আর ব্যাপক অগ্নিকাণ্ড চালিয়েছে। জাতিগত নির্মূলের এই অভিযান মানবতা বিরোধী অপরাধের সঙ্গেই সমতুল্য। ’ 

রাখাইন থেকে পালিয়ে এ পর্যন্ত  বাংলাদেশে সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বলে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা জানিয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।