ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘আমেরিকা আগে কিন্তু একলা নয়’, সুর বদল ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৮
‘আমেরিকা আগে কিন্তু একলা নয়’, সুর বদল ট্রাম্পের ডোনাল্ড ট্রাম্প

সমালোচক নেতাদের সমালোচনা আর মিত্র নেতাদের খোঁচার মুখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুর বদলে যাচ্ছে। এতোদিন ধরে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ বা সর্বাগ্রে আমেরিকা বলে এলেও এবার দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে (ডব্লিউইএফ) নেতাদের সামনে তিনি বলেছেন, ‘আমেরিকা ফার্স্ট, নট আমেরিকা অ্যালোন’ (আমেরিকা সর্বাগ্রে, কিন্তু একলা নয়)।

ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ‘আমেরিকা একলা নয়’ বলে ট্রাম্প সম্ভবত তার ‘একলা চলো’ নীতি থেকেই সরে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ডব্লিউইএফে উদ্বোধনী ভাষণ দিচ্ছিলেন ট্রাম্প।

‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ ও ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ ইত্যাদি স্লোগান ধারণ করে ক্ষমতায় বসা ট্রাম্প শুরু থেকেই ‘প্রটেকশনিজম’র (বাজার বিষয়ে আত্মমুখী রক্ষণশীলতা) পক্ষে সাফাই গাইছিলেন। বছরখানেক আগে হোয়াইট হাউসে ওঠার পর তিনি বরাবর বলে আসছিলেন বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে রক্ষার কথা। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তার ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা ‘টিপিপি’ বাণিজ্য চুক্তি বাতিলের নির্বাহী আদেশ অনেক মিত্র দেশকেও ক্ষুব্ধ করে।

এই দাভোসেই যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মিত্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কড়া সমালোচনা করেন ট্রাম্পের প্রটেকশনিজমের। একই ধরনের সুর ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও ইউরোপীয় মিত্র ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মুখে।

এসব সমালোচনার প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘যে চুক্তি ছিল, যদি তার চেয়ে আমরা উল্লেখযোগ্যভাবে ভাল চুক্তি করতে পারি, তবে আমরা টিপিপি করতে পারি। ’

আর শুক্রবার দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প বিদেশি কোম্পানিগুলোকেই সবুজ সংকেত দিয়ে বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমি হয়তো প্রথমেই যুক্তরাষ্ট্রকে আগে রাখবো। তার মানে এই নয় যে আমরা একলা চলবো। বাণিজ্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্র উন্মুক্ত। আমরা আবারও প্রতিযোগিতার বাজারে নেমেছি।

তবে এসময় ট্রাম্প ‘লুটেরা’ বাণিজ্যেরও কড়া সমালোচনা করেন। তিনি মিত্র দেশগুলোকে সতর্ক করে বলেন, এ ধরনের অন্যায্য বাণিজ্য কখনোই সহ্য করা হবে না।
 
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে মজবুত করার কৃতিত্ব নিয়ে ট্রাম্প বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের টাকা নিয়ে আসো, চাকরি নিয়ে আসো, ব্যবসা নিয়ে আসো আমেরিকায়। আমেরিকা ব্যবসা-বাণিজ্যের যুদ্ধ করতে চায় না, চায় ন্যায্য বাণিজ্য।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, একের পর এক চুক্তি বাতিল এবং অভিবাসীদের বিতাড়িত করতে কড়া অবস্থান নেওয়ার কারণে ট্রাম্প তার মিত্রদের যে তোপের মুখে পড়েছেন, সেটা থেকে নিজেকে উতরে তুলতেই সুর নরম করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।