ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ভারতরত্ন নেবে না ভূপেন হাজারিকার পরিবার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
ভারতরত্ন নেবে না ভূপেন হাজারিকার পরিবার

ঢাকা: ভারতরত্ন পুরস্কার নেবে না বিখ্যাত গায়ক ভূপেন হাজারিকার পরিবার।

দেশের নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে এ সম্মাননা তারা ফিরিয়ে দিচ্ছেন বলে সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়

এ বিষয়ে ভূপেন হাজারিকার ছেলে তেজ হাজারিকা বলেন, আমি অসমের এ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত। এ থেকে আমি সরতে পারি না।

ভূপেন হাজারিকা সবসময়ই এর প্রতিবাদ করেছেন। সম অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাই আমরা এ সম্মান নিতে পারছি না।

এ বিষয়ে ভারতীয় এক সংবাদিকের টুইট

সম্প্রতি, ভূপেন হাজারিকাসহ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও সমাজকর্মী নানাজি দেশমুখকে ভারতরত্ন সম্মানে সম্মানিত করার কথা জানায় কেন্দ্রের সরকার। প্রজাতন্ত্র দিবসেই ওই সম্মান তুলে দেওয়া হবে জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে ভারত সরকারের দেওয়া মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মান নেবেন না বলে জানায় ভূপেন হাজারিকার পরিবার।

ভারতীয় উপমহাদেশের কিংবদন্তির কণ্ঠশিল্পী ভূপেন হাজারিকা ৮ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ সালে আসামের সদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ২০১১ সালের ৫ নভেম্বর ৮৫ বছর বয়সে মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানী হাসপাতালে মারা যান।

তিনি ছিলেন ১০ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। ১৯৪২ সালে গুয়াহাটির কটন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট আর্টস, কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৪ সালে বি.এ এবং ১৯৪৬ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ পাস করেন। ১৯৫২ সালে নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

দরাজ গলার অধিকারী আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা ছিল এই কণ্ঠশিল্পীর। মাত্র ১০ বছর বয়স থেকেই গান লেখে সুর দিতে থাকেন তিনি। আসামের চলচ্চিত্রে তার অভিষেক হয় এক শিশুশিল্পী হিসেবে। ১৯৩৯ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি অসমীয়া ভাষায় নির্মিত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা পরিচালিত ইন্দুমালতী ছবিতে ‘বিশ্ববিজয় নওজোয়ান’ শিরোনামের একটি গান গেয়েছিলেন। পরে তিনি অসমীয়া চলচ্চিত্রের একজন নামজাদা পরিচালক হয়ে ওঠেন।

বাংলাদেশ, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে ভূপেন হাজারিকার জনপ্রিয়তা ছিল ব্যাপক। অসমীয়া ভাষা ছাড়াও বাংলা ও হিন্দি ভাষাতেও তিনি সমান পারদর্শী ছিলেন এবং অনেক গান গেয়েছেন। অবশ্য এসব গানের অনেকগুলোই মূল অসমীয়া থেকে বাংলায় অনূদিত। তার গানে মানবপ্রেম, প্রকৃতি, ভারতীয় সমাজবাদের, জীবন-ধর্মীয় বক্তব্য বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। এছাড়াও, শোষণ, নিপীড়ন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদী সুরও উচ্চারিত হয়েছে বহুবার।

সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য নেক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য পুরুস্কারগুলো হচ্ছে- ১৯৭৯ সালে অল ইন্ডিয়া ক্রিটিক অ্যাসোসিয়েশন পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে অসম সরকারের শঙ্করদেব পুরস্কার, ১৯৯২ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার, ১৯৯৩ সালে পদ্মভূষণ, ২০০১ সালে অসম রত্ন এবং ২০০৯ সালে সঙ্গীত নাটক একাডেমি পুরস্কার। তিনিই প্রথম ভারতীয় হিসেবে জাপানে এশিয়া প্যাসিফিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে রুদালী ছবির শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালকের পুরস্কার অর্জন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।