ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ব্রেক্সিট চুক্তি: ব্রিটেনে ব্যবসায় স্থবিরতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
ব্রেক্সিট চুক্তি: ব্রিটেনে ব্যবসায় স্থবিরতা ব্রেক্সিট ইস্যু

ঢাকা: ব্রেক্সিট চুক্তিতে কোনো সমঝোতায় না এসে ব্রিটেন সরকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ব্রিটেনের ব্রেক্সিট চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাব্য তারিখ ২৯ মার্চ। ৫০ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার কারণে ২০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন অমীমাংসিতই রয়ে গেলো বলে জানায় ব্রিটেনের চেম্বার অব কমার্স (বিসিসি)।

বিসিসি বলছে, যুক্তরাজ্য এবং ইইউর মধ্যে দক্ষ কর্মীদের কীভাবে সরানো হবে, কোন নিয়ম অনুসরণ করতে হবে এবং কী ধরনের বাণিজ্যিক চুক্তি করা হবে, তা এখনও জানা যায়নি।

ব্রিটেন সরকার বলছে, ব্রেক্সিট চুক্তির অনুমোদন পেতে তারা মনোযোগী ছিল। তাদের অর্থনীতিকে সমর্থন, চাকরি এবং ব্যবসার ও ব্যক্তিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সর্বোত্তম উপায় হলো ইইউর সঙ্গে একমত হয়ে চুক্তিটি থেকে ফেরা।

সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, চুক্তিটি সংসদে পাস করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো সুরক্ষিত করার ব্যাপারে আমরা খেয়াল রাখছি।

গত মাসে ব্রেক্সিট ইস্যুতে সংসদে বিশাল হারের পর থেকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তার ব্রেক্সিট চুক্তিতে কিছু পরিবর্তন আনতে চাচ্ছেন।

ব্রেক্সিট চুক্তি থেকে প্রস্থান এড়াতে প্রধানমন্ত্রীকে ২৯ মার্চের মধ্যেই সংসদ থেকে অনুমোদন পেতে হবে। তা না হলে ইউকে ওয়ার্ল্ড ট্রেড অরগানাইজেশনের নীতিমালা পূরণ করতে ব্যর্থ হবেন তিনি।

কয়েক হাজার বাণিজ্যিক সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করা বিসিসি বলছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। কারণ ব্রেক্সিট থেকে বেরিয়ে আসার পরের পরিণাম নিয়ে ইউকে প্রস্তুত নয়।

ব্রেক্সিট ইস্যুতে কি ঘটতে যাচ্ছে, তার স্বচ্ছতা নিয়ে সতর্কতা প্রকাশ করেছে দেশটির দ্য বিজনেস লবি গ্রুপ। এই ইস্যু ইতোমধ্যে দেশটির বিনিয়োগও বৃদ্ধি স্থগিত করেছে বলে জানায় তারা।

বিসিসির মহাপরিচালক অ্যাডাম মার্শাল বলেন, সরকার থেকে প্রতিষ্ঠানগুলো ত্যাগ করার ব্যাপারে কোনো স্বচ্ছ ধারণা না দেওয়ায় বিষয়টি খুব ঝুঁকিতে রয়েছে।

অ্যাডাম বলেন, চুক্তি এবং কাস্টমস শুল্কসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানগুলো অন্ধকারেই রয়ে গেছে।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোর এসব প্রশ্নের উত্তর প্রয়োজন। যার ওপর ভিত্তি করে তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

এসব ব্যাপার নিয়ে বিসিসি ২০টি প্রশ্নের তালিকা প্রকাশ করেছে, যার উত্তর প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজন। প্রশ্নগুলোর মধ্যে মার্চের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠানগুলো ইউকে এবং ইইউয়ের মধ্যে পণ্যসামগ্রী আনা-নেওয়া করতে পারবে কি-না এবং কোনো আমদানি শুল্ক থাকবে কি-না তা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর মার্ক কার্নি এমপিদের বর্তমান ব্রেক্সিট সংঘাত সমাধানের আহ্বান জানানোর পর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও সতর্কতা আসা শুরু করেছে।

যেখানে চীনের অর্থনীতির গতিবেগ কমে যাচ্ছে এবং বাণিজ্য ঝুঁকির চিন্তা বাড়ছে, এমন সময়ে ব্রেক্সিটে ‘নো-ডিল ’ এর ফলে অর্থনৈতিক ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে বলে সতর্কতা প্রকাশ করেছেন কার্নি।

সবার স্বার্থেই ব্রেক্সিট ইস্যুর সমাধান হওয়া প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

এই সপ্তাহের শুরুতে সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, গত বছরের ছয় বছরে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি সর্বনিম্নতম বার্ষিক হারে নেমেছে। অর্থনীতিবিদরা ব্রেক্সিট ইস্যুকেই এর পেছনে দায়ী করেছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
এসএ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।