দিল্লি: উপমহাদেশের প্রখ্যাত সারেঙ্গী বাদক এবং ধ্রুপদী সঙ্গীতের কিংবদন্তী ওস্তাদ সুলতান আলী খান আর নেই। তিনি রোববার বিকেলে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীর একটি হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেছেন।
তিনি দীর্ঘ দিন বার্ধক্য জনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
হিন্দী গানের ইতিহাসে অসম্ভব জনপ্রিয় গান ‘পিয়া বাসন্তি রে’ এবং ‘আলবেলা সাজন আও রে’ এর পেছনে আছে এই মহান শিল্পীর অসাধারণ স্বর্গীয় কণ্ঠ।
পদ্মভূষণ খেতাবে ভূষিত ধ্রুপদী সঙ্গীতের এই পুরোধা ভারতের জোধপুরের একটি বিখ্যাত সারেঙ্গী বাদক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তার পরিবার জানায়, কিছুদিন ধরে তার ডায়ালাইসিস করা হচ্ছিল।
তার জানাজা এবং দাফন আগামী সোমবার জন্ম শহর জোধপুরে অনুষ্ঠিত হবে।
সারেঙ্গী বাজানোর জন্য বিখ্যাত এই শিল্পী স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বাদ্যযন্ত্রের ওপর তার অসাধারণ দখল এবং উদাত্ত আওয়াজের গায়কীর জন্য।
১১ বছর বয়স থেকেই তিনি সঙ্গীত পরিবেশনা শুরু করেন। পরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ওস্তাদ রবিশংকর এবং জর্জ হ্যারিসনের সঙ্গে ১৯৭৪ সালে ‘ডার্ক হর্স ওর্য়াল্ড ট্যু’র এ অংশ নেন।
ওস্তাদ সুলতান আলী খান প্রাথমিকভাবে বাবা প্রখ্যাত শিল্পী ওস্তাদ গুলাব খানের কাছ থেকে সঙ্গীতে শিক্ষা লাভ করেন । এর পর ইন্দোর ঘরানার প্রখ্যাত ধ্রুপদী গুরু ওস্তাদ আমির খানের কাছে তালিম নেন।
একজন সারেঙ্গী বাদক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পর ওস্তাদ সুলতান আলী খান হিন্দী চলচ্চিত্র জগতে কাজ শুরু করেন। এসময় তিনি ভারতের অন্য প্রখ্যাত শিল্পী লতা মাঙ্গেশকর, খৈয়াম, সঞ্জয় লীলা বানসালী ছাড়াও পশ্চিমা বিশ্বের সমসাময়িক অনেক খ্যাতিমান সঙ্গীতজ্ঞের সঙ্গেও কাজ করেছেন।
সঙ্গীত সাধনার স্বীকৃতি হিসেবে পদ্মভূষণ ছাড়াও অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে সঙ্গীত নাট্য একাডেমি পুরস্কার মহারাষ্ট্র স্বর্ণ পদক এবং ১৯৯৮ সালে আমেরিকান একাডেমি অব আর্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড উল্লেখযোগ্য।
ওস্তাদ সুলতান আলী খান বিশ্বের প্রখ্যাত সঙ্গীত ফিউশন দল তবলা বেস্ট সায়েন্সেরও অন্যতম সদস্য । এই দলের অপর দুজন সদস্য হলেন- বিখ্যাত তবলা বাদক ওস্তাদ জাকির হোসেন এবং আমেরিকার প্রখ্যাত ব্যাসিস্ট বিল ল্যাসওয়েল।
তার ছেলে ওস্তাদ সাবির খানও একজন প্রখ্যাত সারেঙ্গী বাদক।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১১