লন্ডন: কথায় আছে ঘটনা ঘটতে এক সেকেন্ডও সময় লাগে না। আর এক সেকেন্ডর কাছে এতো রীতিমতো অনেক সময়।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, ‘জাহাজের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জাহাজের সামনে বরফের চাই আছে বলে সতর্ক করেন এবং একই সঙ্গে গতিপথ পরিবর্তন করতেও বলেন। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি নেওয়ার আগে তিনি সময় নিয়েছিলেন বহু মূল্যবান ত্রিশ সেকেন্ড। ’
যদি উইলিয়াম মারডক তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন তাহলে এক হাজার চারশ ছিয়ানব্বই জন মানুষসহ বেঁচে যেতো বিশাল এই জাহাজটি। গবেষকরা জানান, ১৯১২ সালে রীক কমিশন যে তদন্ত করেছিল তা ছিল সীমিত আকারে। বর্তমানে সেই সীমিত তদন্ত আকারে আরও বড় করা হয়েছে।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, জাহাজের ফার্স্ট অফিসার মারডক তাৎক্ষণিক ভাবেই সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন। কিন্তু বরফের চাই অনেকটা সময় পরে দেখা গিয়েছিল। তবে বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, মারডক এই কঠিন সিদ্ধান্তটি নিতে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছিলেন। কারণ তিনি ভেবেছিলেন টাইটানিকের মতো বিশাল জাহাজ ওই বরফের চাই ভেঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারবে। এর ফলেই তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ঝুঁকি নিতে চেয়েছিলেন।
১৯১২ সালের তদন্ত মতে, বরফের চাইটি জাহাজ থেকে দেড় হাজার ফুট দুরে ছিল। ঠিক সাইত্রিশ সেকেন্ড পর জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বরফের চাইয়ের। তদন্তে আরও বেরিয়ে আসে, আদেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাৎক্ষণিকভাবে জাহাজের গতিপথ পাল্টানো হয়েছিল। আর এই আদেশ দিতে তিনবার ঘণ্টা বাজানোও হয়েছিল। জাহাজের ব্রীজ থেকে টেলিফোনে বলা হয়, ‘জাহাজের সামনে একটা বরফের চাই দেখা গিয়েছে। ’
টাইটানিকের ঘটনা নিয়ে অনেক তদন্ত হয়েছে বিভিন্ন সময়। কিন্তু সর্বশেষ গবেষণায় দেখা যায়, বরফের চাইটি আসলে দেখা গিয়েছিল জাহাজ থেকে দুই হাজার ফুট দুরে। জাহাজের গতিপথ পরিবর্তন করার জন্য সর্বসাকুল্যে এক মিনিট সময় ছিল হাতে। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতেই নিতেই কেটে যায় ত্রিশ সেকেন্ড।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১১