ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ ভাদ্র ১৪৩২, ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

চীনে পাচারকারীদের কবল থেকে ১৭৮শিশু উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৬০৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:০৪, ডিসেম্বর ৭, ২০১১
চীনে পাচারকারীদের কবল থেকে ১৭৮শিশু উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৬০৮

বেইজিং: শিশু অপহরণ এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সমগ্র চীন জুড়ে পরিচালিত অভিযানে চীনের পুলিশ শিশু পাচারকারীদের দুইটি বড় চক্রকে ভেঙ্গে দিয়েছে। চীনের ১০ টি প্রদেশ ব্যাপী বিস্তৃত এই পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে চীনের পুলিশ এর সঙ্গে জড়িত ৬০৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং পাচারকারী দলের খপ্পড় থেকে ১৭৮টি শিশুকে উদ্ধার করেছে।



বুধবার কর্তৃপক্ষ সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানায়।

চীনে শিশু অপহরণ এবং পাচারের বিরুদ্ধে ব্যাপক পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত থাকা সত্বেও দেশটিতে শিশু অপহরণ এবং পাচারের ঘটনা ইদানিং ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।

তবে বিশ্লেষকরা এই অপরাধ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য চীনা কর্তৃপক্ষের  আরোপ করা কঠোর এক সন্তান নীতি এবং দেশটির দূর্বল দত্তক আইনকে দায়ী করেছে।

এ প্রসঙ্গে চীনের জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রনালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, চীনের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ সিচুয়ানের পুলিশ গত মে মাসে একটি সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত করার সময় সেখানে শিশু পাচার কারীদের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রথম তথ্য পায় । এর পর গত আগস্ট মাসে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় অপর একটি প্রদেশ ফুজিয়ানের পুলিশ শিশু পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরেকটি সংগঠিত চক্রের সন্ধান পায়।
 
এর পর পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যাপারে প্রমাণ সংগ্রহ করতে থাকে এবং অবশেষে তদন্ত সম্পন্ন করে সমগ্র চীন জুড়ে বিস্তৃত দশটি ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে ৫ হাজার পুলিশ অফিসারের  অংশগ্রহনণ  অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে এক যোগে একটি স্বমন্বিত  অভিযান শুরু করে।

গত নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখে পরিচালিত এই অভিযানে পাচারকারীদের সঙ্গে জড়িত ৬০৮ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পাচারকারীদের কবল হতে ১৭৮ টি শিশুকে উদ্ধার করা হয় হয় বলে জানায় পুলিশ।

উদ্ধারকৃত শিশুদেরকে একটি সেবা সংস্থার হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। চীনের কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে এই অভিযানকে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে এ যাবৎ কালের সবচেয়ে বড়  সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেছে। তবে কর্তৃপক্ষ উদ্ধার করা শিশুদের বয়স এবং তারা কবে তাদের পিতামাতার সঙ্গে একত্রিত হবে সে সম্পর্কে কিছু বলেনি।

চীনের দুর্বল দত্তক আইন সে দেশের নি:সন্তান দম্পতিদের চোরা বাজার থেকে অপহরণকরা শিশুদের ক্রয় বিক্রয়কে উৎসাহিত করছে বলে অনেকে মনে করে।

এছাড়া অনেকে চীনা কর্তৃপক্ষের কঠোর এক সন্তান নীতির কূফলকে দায়ী করেন। চীনের এই আইনের  ফলে চীনা পরিবারগুলো এক মাত্র সন্তান হিসেবে ছেলে সন্তান কামনা করে, যাতে তারা তাদের সম্পদের উত্তরাধিকারী হতে পারে।

এছাড়া অনেক সময় পুত্রসন্তান বিহীন এবং দ্বিতীয় সন্তান নিতে অপারগ দম্পতিরা কালোবাজার থেকে শিশু কিনে নিতে আগ্রহী হয়। অনেক ক্ষেত্রে তারা অনাকাঙ্খিত  মেয়ে শিশুদের পাচারকারীদের কাছে বিক্রিও করে দেয়।

চীনা কর্তৃপক্ষ অব্যাহতভাবে শিশু পাচার এবং অপহরণকারী চক্রের  বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসলেও এ রকম কেলেংকারীর ঘটনা বেড়েই চলেছে।

গত জুলাই মাসে চীনা পুলিশ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৩৬৯ জনকে আটক করেছে এবং ৮৯ টি শিশুকে উদ্ধার করে।

এ ছাড়া গত নভেম্বর মাসে পুলিশ চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শানডাং প্রদেশের একটি শিশু পাচার চক্রকে ভেঙ্গে দেয়। তারা গরীব দম্পত্তিদের কাছ থেকে শিশুদের কিনে নিয়ে প্রতিটি শিশুকে ৮ হাজার ডলারে বিক্রি করতো।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।