মালে: শুধু আবর্জনা ফেলার জন্য ছোট্ট একটি কৃত্রিম দ্বীপ আছে মালদ্বীপে। থিলাফুশি নামে ওই দ্বীপটি রাজধানী মালে থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে।
আবর্জনা ফেলার জন্যেই এই দ্বীপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে একে ‘রাবিশ আইল্যান্ড’ বা ‘আবর্জনার দ্বীপ’ বলা হয়।
কিন্তু সম্প্রতি এই দ্বীপে আবর্জনা এতো বেশি হয়েছে যে, এর কৃত্রিম হ্রদটিও বর্জ্য পদার্থে ভরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। একারণে সরকার সাময়িকভাবে এখানে আবর্জনা ফেলা নিষিদ্ধ করেছে।
আবর্জনার পাহাড় অপসারণ করার জন্য ইতোমধ্যেই জরুরি ভিত্তিতে পরিষ্কার অভিযান শুরু হয়েছে।
দিগন্তজোড়া নীল পানি আর সাদা বালির দ্বীপ হিসেবে বিখ্যাত মালদ্বীপের সঙ্গে এই আবর্জনার দ্বীপের যেনো কোনও সম্পর্কই নেই। এখানে শুধু আবর্জনার স্তুপ, অনিঃশেষ ধোঁয়াশা আর জ্বালাকর ধোঁয়া লেগেই আছে।
এই আবর্জনা থেকে ধাতব বা প্লাস্টিক সংগ্রহ করে বিক্রি করা অনেকের ব্যবসা। এদের মধ্যে বেশিরভাগই বাংলাদেশি। সারা দেশ থেকে এখানে আবর্জনা এনে জড়ো করা হয়। তার পর ধাতব পদার্থ এবং প্লাস্টিক আলাদা করে এগুলো পুঁতে ফেলা হয় অথবা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
ইদানীং এখানে আবর্জনা ফেলার সময় কোনও নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না বলে কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। জাহাজ বা নৌকা থেকে আবর্জনা খালাস করতে প্রায় ৭ ঘণ্টা লেগে যায়। এ কারণে মাঝিরা অধৈর্য হয়ে কাছাকাছি কৃত্রিম হ্রদেই আবর্জনা ফেলছে।
মালদ্বীপের পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থার প্রধান ইবরাহিম নাইম বলেন, ‘আবর্জনা খালাস করতে গিয়ে টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে বেশি সময় লাগছে। ’
নাইম জানান, কৃত্রিম হ্রদটি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্য দ্বীপ থেকে আসা জাহাজের জন্য সব জেটি বন্ধ থাকবে। তবে রাজধানী মালের জন্য একটি আলাদা জেটি খোলা রাখা হয়েছে।
এদিকে সরকারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সমালোচনা করে স্থানীয় পরিবেশ আন্দোলনকর্মী আহমেদ ইকরাম বলেছেন, ‘দেশে বিদুৎ ও জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে থিলাফুশি দ্বীপে জৈব জ্বালানির প্ল্যান্ট নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকার। কিন্তু এখনও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
ইকরামের পরিচালনায় মালদ্বীপের ব্লুপিস নামের পরিবেশবাদী সংগঠন বলে আসছে, বিষাক্ত বর্জ্য থেকে সৃষ্ট ক্ষতিকর পদার্থ চুয়ে চুয়ে সাগরে গিয়ে পড়ছে।
থিলাফুশি দ্বীপটি একটি কোরাল শৈলশিরা থেকে ২০ বছর আগে উদ্ধার করা হয়। এখানে জাহাজ মেরামতসহ আরও কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১১