ত্রিপোলি: লিবিয়ার নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি নিহত হওয়ার পর দেশটির শাসন ক্ষমতা এখন নতুন সরকারের হাতে। আত্মসমর্পণ করার পরও তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
সাদি
যুদ্ধের সময় সাদি গাদ্দাফি পালিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ নাইজারে চলে যান। এখন নাইজার কর্তৃপক্ষ বলছে, জাতিসংঘ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেই তিনি পশ্চিম আফ্রিকার কোনো দেশে চলে যাবেন। তবে বর্তমান সরকার নাইজারের কাছে সাদিকে ফেরত চেয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর সাদি মেক্সিকোতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা যায়। ইন্টারপোল তার সদস্যভুক্ত দেশুগুলোকে অনুরোধ করেছে সাদিকে গ্রেপ্তার করার জন্য।
গত আগস্ট মাসের গোড়ার দিকে সাদি লিবিয়ার জাতীয় অন্তর্বর্তী পরিষদের (এনটিসি) সঙ্গে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছিলেন।
হান্নিবল
ছেলে হান্নিবল গাদ্দাফি মা এবং মেয়েকে নিয়ে আগস্ট মাসেই আলজেরিয়া পালিয়ে যান। ২০০৮ সালে সুইডেনে স্থানীয় দুই কূটনীতিকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার কারণে হান্নিবল এবং তার অন্তস্বত্তা স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। লিবিয়ার হস্তক্ষেপে এবং কিছুটা ছাড়ের বিনিময়ে সে যাত্রায় তিনি রক্ষা পান।
মোহাম্মদ
মুয়াম্মার গাদ্দাফির প্রথম স্ত্রীর সন্তান মোহাম্মদ গাদ্দাফি। আগস্ট মাসে তিনিও লিবিয়া থেকে আলজেরিয়া পালিয়ে যান। তিনি ছিলেন লিবিয়ার অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট এবং দেশটির টেলিফোন নেটওয়ার্কের মূল দায়িত্বে।
আয়শা
আয়শা পেশায় একজন আইনজীবী। তিনিও আগস্ট মাসেই আলজেরিয়াতে পালিয়ে চলে যান। তিনি রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও গাদ্দাফির অনুসারীদের র্যালিতে প্রথম কাতারেই তাকে দেখা গিয়েছিল। ইরাকের সাবেক নেতা সাদ্দাম হোসেনের আইনজীবী হিসেবে লড়েছেন তিনি। ২০১০ সালে একটি ব্রিটিশ পত্রিকায় সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি লিবিয়ার উন্নত ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি। আন্তর্জাতিক অঙ্গণে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে লিবিয়া। সবার সঙ্গেই আমাদের বন্ধুত্ব তৈরি হচ্ছে। ’
আলজেরিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার পর সেখানে তিনি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছেন বলে আলজেরিয়া সূত্র জানিয়েছে।
মোতাসিম
গাদ্দাফিপুত্র মোতাসিম ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। অক্টোবর মাসের ২০ তারিখ সিরর্তে শহরে তাকে হত্যা করা হয়। লিবিয়ায় যুদ্ধচলাকালীন তার ভূমিকা ততোটা দৃশ্যমান ছিল না। অনেকেরই ধারনা ছিল, তিনি যুদ্ধে নিচ্ছেন না।
খামিশ
লিবিয়ার গণমাধ্যমে খামিশের মৃত্যুর খবর তিন বার প্রচার করা হয়। তবে সিরিয়াভিত্তিক একটি টেলিভিশনে গাদ্দাফি খামিশের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। আগস্ট মাসের ২৯ তারিখ তিনি ন্যাটো বাহিনীর আক্রমণে নিহত হন। খামিশ ছিলেন লিবিয়ার ৩২তম ব্রিগেডের কমান্ডার। আর এই ব্রিগেড ছিল অন্যসব ব্রিগেডের মধ্যে সবচেয়ে চৌকস।
সাঈফ আল-আরব
১৯৮৬ সালে মাত্র চার বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমান হামলায় আহত হয়েছিলেন সাঈফ আল-আরব। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন রোনাল্ড রিগ্যান। ন্যাটোর বোমা হামলায় লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। সাঈফ আল আরব ছিলেন জার্মানিতে পড়াশুনা করা উচ্চশিক্ষিত এক যুবক।
সাঈফ আল-ইসলাম
নভেম্বর মাসের ১৯ তারিখ কয়েকজন দেহরক্ষীসহ সাঈফ আল-ইসলাম বিদ্রোহীদের হাতে আটক হন। মুয়াম্মার গাদ্দাফির যোগ্য উত্তরসূরী বলা হতো তাকে। লিবিয়ায় যুদ্ধচলাকালীন গাদ্দাফির পরে সবচেয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠ ছিল তার। লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকসে পড়ালেখা করেছেন। তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের পরোয়ানা ছিল। এখন তাকে বিচারের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১১