সিডনি: অস্ট্রেলিয়া ব্যতিক্রম হিসেবে ভারতের বিরুদ্ধে তেজষ্ক্রিয় মৌল ইউরেনিয়াম রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে রাজি আছে। কিন্তু এরকম সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের মতো দেশের জন্য দাবি-দাওয়ার দরজা খুলে দেবে।
ভারতে রাষ্ট্রীয় সফররত অস্ট্রেলীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী স্টিফেন স্মিথ বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেছেন।
ক্ষমতাসীন মধ্য-বামপন্থী দল লেবার পার্টি সম্প্রতি ভারতে ইউরেনিয়াম রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহরের পক্ষে ভোট দিয়েছে। দলের জাতীয় নীতি নির্ধারণ শীর্ষ সম্মেলনে এ ব্যাপারে একমত হয় দলটি।
বিশ্বের মোট ইউরেনিয়ামে ৪০ শতাংশ মজুদ আছে অস্ট্রেলিয়ায়। ইউরেনিয়াম রপ্তানিতে শীর্ষস্থানীয় দেশ এটি। পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে (এনপিটি) স্বাক্ষর না করার কারণে অস্ট্রেলিয়া ভারত এবং পাকিস্তানে ইউরেনিয়াম রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে।
ভারতে একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্মিথ বলেন, ‘লেবার পার্টির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত। কিন্তু এটা হলে পাকিস্তানও এমন সুবিধা পেতে চাইবে। ’
তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রেক্ষিতে ইউরেনিয়াম রপ্তানির বিষয়টি আমার দৃষ্টিতে অনন্য। কিন্তু পরমাণু অস্ত্র বিস্তারে পাকিস্তানের রেকর্ড ভাল নয়। ’
এনপিটিতে স্বাক্ষর না করা সত্ত্বেও ভারতে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছে যে, বেসামরিক এবং সামরিক কর্মসূচি আলাদা হবে এবং কোনও ধরনের পরমাণু বোমা পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকবে না তার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে ভারতকে।
ভারত বিশ্বের সবচে বড় গণতান্ত্রীক দেশ। এখানে পরমাণু অস্ত্র বিস্তারের কোনও প্রমাণ নেই বলে উল্লেখ করেন স্মিথ।
ভারতের বিরুদ্ধে ইউরেনিয়াম রপ্তানি নিষেধাজ্ঞাকে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে একটি জ্বালাকর বস্তু বা বালি কণা বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন এটার সমাপ্তি ঘটেছে। ভারতের কর্মকর্তারা কৌশলগত সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
স্মিথ বলেন, ‘সারা বিশ্ব এখন এশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং ভারত মহাসাগরের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। আর ভারত এর কেন্দ্রীয় অংশ। ’
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অস্ট্রেলিয়া সফরে অস্ট্রেলীয় জলসীমায় মার্কিন সামরিক শক্তি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্মিথ জানান, এ বিষয়টি নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী একে এন্টনির সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন যে, অস্ট্রেলিয়া এখন যুক্তরাষ্ট্রের একটি মিত্র।
ভারতকে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রপ্তানি বাজার উল্লেখ করেন স্মিথ। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের শক্তিশালী অংশীদারিত্বের প্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার সঙ্গে প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা বিষয়ে পরস্পরের সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায় অস্ট্রেলিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১১