ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ ভাদ্র ১৪৩২, ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ড্রোন আটক: ইরানে সিআইএ’র উপস্থিতির প্রমাণ

রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০৫, ডিসেম্বর ১০, ২০১১
ড্রোন আটক: ইরানে সিআইএ’র উপস্থিতির প্রমাণ

ঢাকা: ইরানে সিআইএ’র চালকবিহীন গোয়েন্দা বিমান (ড্রোন) ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় দেশটিতে সিআইএ’র গোয়েন্দাগিরির একটি অজানা অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাটি ইরানে কোনও কার্যক্রম পরিচালনার ব্যাপারে খুব বেশি কিছু কখনই প্রকাশ করেনি।

ধারণা করা হয়, দেশটিতে সিআইএ’র শক্তিশালী গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক রয়েছে। তবে আক্ষরিক অর্থে কোনও দৃশ্যমান কর্মকাণ্ড চোখে পড়ে না।
 
ইরান গত ৪ ডিসেম্বর হস্তগত ড্রোনটির একটি পূর্ণাঙ্গ ভিডিও চিত্র প্রকাশ করেছে। ভিডিও চিত্রে ড্রোনটিকে প্রায় অক্ষত অবস্থায় দেখা গেছে।

সিআইএ এবং পেন্টাগন স্বীকার করেছে, তাদের একটি ড্রোন আফগানিস্তানে অপারেশন পরিচালনার সময় হারিয়ে গেছে। কিন্তু  যুক্তরাষ্ট্রের এই মনুষ্যবিহীন আরকিউ-১৭০ সেন্টিনাল বিমানটি কোথায় এবং ঠিক কীভাবে হারিয়ে গেল সে ব্যাপারে সিআইএ এবং পেন্টাগন এখনও নিশ্চুপ।

যুক্তরাষ্ট্রের গোপন এই কার্যক্রম সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল একটি সূত্র জানিয়েছে, ইরানের হাতে ধৃত ড্রোনটি আসলে দেশটির ওপর সিআইএ’র গোপন নজরদারিতে ব্যবহৃত হচ্ছিল।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেন্টাগনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তাদের বিশ্বাস ড্রোনটি কারিগরী ত্রুটির কারণেই ভূপাতিত হয়েছে। একে গুলি করে নামানো অথবা এর কম্পিউটার ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইরানি দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

তবে হাতে পড়া ড্রোনের প্রযুক্তি আয়ত্ব করা বা এর মাধ্যমে কোনও গোপন তথ্য ইরানের হাতিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনাকে নাকচ করা যায় না।

এমনকি রাশিয়া অথবা চীনের কাছে বিমানটি বিক্রি করে দেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, কম্পিউটার ব্যবস্থা হ্যাক করে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কার্যক্রম সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ ইরানের পক্ষে সম্ভব হবে না।

গত কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্নভাবে ইরানের ওপর গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের একজন অভিজ্ঞ বেসরকারি সামরিক বিশ্লেষক তার অভিজ্ঞতার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। ২০০৮ সালে তিনি একবার উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কমান্ড সেন্টার পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে গোয়েন্দাগিরির কাজে ব্যবহৃত পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার বিভিন্ন উপাদান সনাক্ত করেন। এগুলোর মাধ্যমে ইরানের ভেতর থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন প্রকার পর্যবেক্ষণ তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছিল বলে তিনি জানান।
 
সংগৃহীত তথ্যগুলোর মধ্যে কিছু আসত ইরানের আকাশে অনেক উচ্চতায় উড্ডয়নরত গোয়েন্দা বিমানের পাঠানো তথ্য থেকে, কিছু পাওয়া যেতো ইরানের ভেতর স্থাপিত যুক্তরাষ্ট্রের গোপন ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতি থেকে। সিআইএ কোনওভাবে ইরানের ভেতর এগুলো স্থাপন করেছিল বলে ধারণা করা হয়।

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও আনুষ্ঠানিক উপস্থিতি নেই তাই এর ভেতরের কোনও ঘটনা জানা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অনেক কঠিন। মূলত এই কারণেই ইরানের সামরিক কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহের জন্য ড্রোন এবং অন্যান্য গোপন ইলেক্ট্রনিক্স গোয়েন্দা যন্ত্রপাতিকে ব্যবহার করতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।