ওয়াশিংটন: যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোয়ন প্রার্থী নিউট গিনগ্রিচ ইসরায়েলের ভূয়সী প্রশংসা করে ফিলিস্তিনীদের অনাহূত বলে আখ্যায়িত করেছেন।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিতর্কে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা অনাহূত, এরা আরব, এরা অন্য কোথাও গিয়ে বসবাস করতে পারে।
২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে মনোয়য়ন প্রত্যাশী মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেসেন্টিভের সাবেক স্পিকার এই গিনগ্রিচ।
গত শুক্রবার প্রচারিত যুক্তরাষ্ট্রের একটি ইহুদি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে এই মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি কি নিজেকে একজন ইহুদি জাতীয়তাবাদী (জায়নিস্ট) মনে করেন ? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, একটি রাষ্ট্র পাওয়ার অধিকার ইহুদি সম্প্রদায়ের রয়েছে।
তিনি দাবি করেন, ফিলিস্তিনিদের নিজেদের কোনও দেশ ছিল না। গত শতাব্দীর প্রথম পর্যন্ত তারা সাবেক অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনস্ত ছিল।
ফিলিস্তিনিদের উড়ে এসে জুড়ে বসা সম্প্রদায় অভিহিত করে তিনি বলেন, এরা মূলত আরব এবং ঐতিহাসিকভাবেই আরব সম্প্রদায়ের অন্তর্গত।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বসবাসের সুযোগ এদের রয়েছে। নানা রাজনৈতিক কারণেই আমরা সেই ১৯৪০ সাল থেকেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে টিকে আছি। আর এটা খুবই মর্মান্তিক। ’
উল্লেখ্য, বেশিরভাগ ঐতিহাসিক মনে করেন, মূলত ১৮৩৪ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটে। এই সময় ফিলিস্তিনের আদি অধিবাসীরা অটোমান দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ করে।
ইউরোপে নির্যাতিত ইহুদিদের জন্য ফিলিস্তিনের তৎকালীন ব্রিটেন নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ একটি প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আরবরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
পরে ১৯৪৮ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম হয় বিশ্বের একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল।
এই যুদ্ধের সময় পাশ্চাত্যের মদদপুষ্ট জায়নিস্টের সশস্ত্র গ্রুপ কমপক্ষে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাদের আবাসভূমি থেকে বিতাড়িত করে।
তখন থেকেই ফিলিস্তিনিরা এই সময়কে ‘নাকবা’ বা ‘মহা বিপর্যয়’ নামে আখ্যা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১১