লন্ডন: ইউরোজোনের ঋণ সঙ্কট নিরসণে এবং ভবিষ্যতে এরকম পরিস্থিতি মোকবাবেলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নতুন চুক্তির প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের ভেটো দেওয়া নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে ব্রিটেন।
উপ-প্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের ইইউ সনদ পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ভেটো দেওয়া ব্রিটেনের জন্য খারাপ হয়েছে।
তবে তার ভাষায়, প্রধানমন্ত্রীকে এমন একটি কঠিন অবস্থান নিতে বাধ্য করার জন্য ফ্রান্স এবং জার্মানিকে দুষেছেন তিনি। তার অভিযোগ ফ্রান্স-জার্মানির আপোসহীন মনোভাবের কারণেই তিনি এমনটি করেছেন।
তবে ইইউ চুক্তিতে ভেটো দেওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ক্লেগ বলেছিলেন, ব্রিটেনের এই ভেটোকে ব্যবহার করেই ওই জোট আবার ঐক্যবদ্ধ হবে।
কিন্তু পরে এক সাক্ষাতকারে তিন বলেন, ইইউ’র এই পদক্ষেপকে প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানালে তা হতো অসমর্থন যোগ্য।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকরা বলছেন, ইইউ’র লিসবন সনদ পরিবর্তন করলে ব্রিটেনের স্বার্থের হানি হবে।
তবে যাই হোক ব্রিটেনকে ছাড়াই এখন জোটের বাকি ২৬ সদস্য নতুন সনদ প্রণয়নের ব্যাপারে একমত। নতুন সনদের মধ্যে অন্যতম হলো, ইউরোজোন সঙ্কট মোকাবেলায় কঠোর বাজেট নীতি প্রণয়ন।
এদিকে বিরোধী লেবার পার্টির নেতা এড মিলিব্যান্ড ক্যামরেনের ভেটোর প্রতিক্রিয়ায় টুইটারে লিখেছেন, এটা ক্যামরনের দুর্বলতার প্রমাণ। সম্মেলনের আগেই কেনও তিনি সমমনা একটা জোট গঠন করতে পারলেন না?
লিবারেল ডেমোক্র্যাটের সাবেক নেতা স্যার মেনজিস ক্যাম্পবেল বলেছেন, এরকম একটি ফলাফল অপরিহার্য ছিল। তবে এই চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর বিস্তারিত এখনও নির্ধারিত হয়নি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ বলেছেন, ক্যামেরনের এই পদক্ষেপ খুবই স্পর্শকাতর। আর এতে সই করা মানে জাতীয় সার্বভৌমত্ব জলাঞ্জলি দেওয়া।
তবে শ্যাডো পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডগলাস আলেকজান্ডার বলেছেন, ডেভিড ক্যামেরনের আলোচনার কৌশল ব্রিটেনকে নামিয়ে দিয়েছে। এর ফলাফল কোনও শক্তি-সামর্থের চিহ্ন বহন করে না বরং এটা ভয়াবহ দুর্বলতা।
ক্যামরনের ভেটোর ব্যাপারে এরকম সরকারের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা এবং বিরোধীদের মধ্যে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। ব্রিটেনের সংবাদ মাধ্যমগুলোই ক্যামরনের সমালোচনায় মুখর।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্যামেরনই প্রথম ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কোনও চুক্তি থেকে সরাসরি ব্রিটেনকে বাইরে রাখলেন।
এই চুক্তিতে সম্মতি দিয়েছে ইউরোজোনভুক্ত ১৭টি দেশ। সামনে আরও ছয়টি নতুন দেশ এতে যুক্ত হবে। তাতে ব্রিটেনকে অনেকটা একঘরে অবস্থায় রেখেই আগামী মার্চের মধ্যে চুক্তির বাকি কাজ সম্পন্ন হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১১