ঢাকা, বুধবার, ১২ ভাদ্র ১৪৩২, ২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

একাত্তরের যুদ্ধে ভারতকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬:৫১, ডিসেম্বর ১৪, ২০১১
একাত্তরের যুদ্ধে ভারতকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র

নয়াদিল্লি: ১৯৭১ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে ভারতকে সর্বাত্মক সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র। ভারতকে যদি চীন কোনো আক্রমন করে তাহলে ভারতকে এই সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র এমনটিই কথা ছিল।

ঐতিহাসিক ওই যুদ্ধের ৪০ বছর পর এই দলিল উন্মোচিত হলো।

গত নভেম্বরের শুরুর দিকে টাইমস অব ইন্ডিয়াতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র শত্রুতাবশত ভারতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো। এমনকি তারা ভারতের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য কয়েক ব্যাটালিয়ন নৌ-সেনাও প্রস্তুত রেখেছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র ওয়াশিংটনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছিল। চীন যদি ভারতকে আক্রমন করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে ভারতকে এমন আশ্বাসও দেওয়া হয় তখন।
 
১৯৭১ সালের ২৫ আগস্ট হেনরি কিসিঞ্জার এবং প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের সঙ্গে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত এলকে ঝা নয়াদিল্লিকে রিপোর্ট করেন। সেই রিপোর্টে তিনি বলেন, ‘চীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ভারতকে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবে না। ’ তবে এই যুক্তরাষ্ট্রই ১৯৬২ সালে চীন ভারত যুদ্ধে ভারতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো।

ভারতের ওই রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনার কয়েক সপ্তাহ আগে কিসিঞ্জার ভারত সফর করেছিলেন। সেসময় তিনি ভারতের তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জগজীবন রামকে বলেন, ‘ভারতের বিরুদ্ধে চীনের যেকোনো পদক্ষেপকে গুড়িয়ে দিতে আমরা একযোগে কাজ করতে পারি। আর এব্যাপারে আমি আপনাকে নিশ্চয়তা দিতে পারি। ’

রাষ্ট্রদূত ঝা কিসিঞ্জারের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে মোট তিন ঘণ্টা কাটিয়েছিলেন আগস্ট মাসের ২৫ তারিখে। আর সেসময় সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতেই প্রচন্ড উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তারা এসময় ইন্দিরা গান্ধী এবং নিক্সনের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করছিলেন। কারণ এর কিছুদিন পরেই ইন্দিরার সঙ্গে নিক্সনের আলোচনা হয়।
 
ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব টি এন কুল তার এক চিঠিতে লেখেন, ‘চীন যদি পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করে যুদ্ধে জড়িয়ে যায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের আচরণেও পরিবর্তন আসবে। কারণ নয়াদিল্লি ভাবছে, চীন যেকোনো সময় ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো দাড়িয়ে যেতে পারে। ’

তিনি আরও লেখেন, ‘এ অবস্থায় আসলে আমাদের আরও পরিস্কার হওয়ার দরকার ছিলো পুরো বিষয়টি নিয়ে। আর তাই চীনের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে আবারও আলোচনায় বসি। আর এর প্রতিউত্তরে কিসিঞ্জার সর্বাত্মক সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন। আর এরপরেই ঘটনার মূল কেন্দ্র থেকে চলে যান তিনি। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৪০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।