ঢাকা: বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় টাইম ম্যাগাজিন এ বছর ‘পার্সন অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদে অংশ নেওয়া প্রতিবাদকারীরাই সম্মিলিতভাবে এবারের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
বুধবার নিউইয়র্কে এনবিসি টিভির একটি অনুষ্ঠানে টাইম কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণা দেয়।
এ সময় মধ্যপ্রাচ্যে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনে দেওয়া প্রতিবাদকারীসহ নিউইয়র্কের পুঁজিবাদবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রতিবাদকারীদের ত্যাগ এবং সংগ্রামী অংশগ্রহণের কথা স্মরণ করে টাইম কর্তৃপক্স। বিভিন্ন ঘটনায় আলোচিত অনেক খ্যাতনামা চরিত্রকে এ বিক্ষোভকারীরা পরাজিত করেছে।
অবশ্য এবারের পার্সন অব দ্য ইয়ার হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন অ্যাডমিরাল উইলিয়াম ম্যাকভারেন। যিনি আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন হত্যার মিশনে অংশগ্রহণকারী কমান্ডোদের নেতৃত্ব দেন। কিন্তু সবাইকে হতবাক করে দিয়ে প্রতিবাদকারীরাই টাইমের এ সম্মানজনক উপাধিতে ভূষিত হলেন।
টাইমের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক রিচার্ড স্ট্যাঙ্গেল এ প্রসঙ্গে এনবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, ইতিহাসের ধারা পরিবর্তনকারী প্রতিবাদকারীরা ইতিমধ্যেই ইতিহাসে পরিণত হয়েছে। তারা ভবিষ্যতেও নতুন ইতিহাস গড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে এ বছরের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিশ্বের সব প্রান্তের প্রতিবাদকারীদের পক্ষে নাম না জানা এক নারী প্রতিবাদকারীর ছবি স্থান পায়। আগামী শুক্রবার টাইমের এ সংখ্যাটি বাজারে ছাড়া হবে।
এদিকে গত বছর সাময়কীটি ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গকে বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচন করে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন একুশ শতকের যোগাযোগ গুরু হিসেবে অভিহিত এবং বছরের সবচেয়ে আলোচিত চরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।
তবে এবারের তালিকায় আলোচিত সম্ভাব্য ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন রাজনৈতিকভাবে আলোচিত। এদের মধ্যে অন্যতম- লাদেন বধের নায়ক অ্যাডমিরাল উইলিয়াম ম্যাকভারেন, চীনা গণতন্ত্রকামী আই উইয়ি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান পল রায়ান।
এছাড়া বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন নবপরিণীতা ব্রিটিশ রাজবধূ, ব্রিটিশ সিংহাসনের অন্যতম উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়ামের স্ত্রী কেট মিডেলটন।
তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচক কমিটি প্রতিবাদকারীদেরই এবারের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে বেছে নিতে সর্বসম্মতভাবে একমত হন।
মার্ক স্ট্যাঙ্গেল এ প্রসঙ্গে বলেন, পৃথিবীজুড়ে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের রাস্তায় বের হওয়া এসব মানুষেরাই তাদের দেশের অত্যাচারী সরকারকে উৎখাত করে গণতন্ত্র এবং তাদের প্রাপ্য মর্যাদাকে ফিরিয়ে এনেছে। যা তারা এর আগে কখনও আস্বাদ করেনি।
উত্তর আফ্রিকার গণআন্দোলনের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আমরা ভেবেছিলাম এই একনায়কদের কখনও ক্ষমতা থেকে সরানো যাবে না। কিন্তু সাহসী প্রতিবাদকারীরা তাদের জীবন এবং জীবিকার ঝুঁকি নিয়েও রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছে এবং এমন একটি পরিবর্তন এনেছে, যা কেউ এর আগে প্রত্যাশা করেনি।
তিনি এই পরিবর্তনকে একটি উল্লেখযোগ্য রূপান্তর হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই পরিবর্তন পৃথিবীকে আরও কল্যাণের দিকে নিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১১