ওয়াশিংটন: সন্ত্রাসবিরোধী একটি বিতর্কিত আইন যুক্তরাষ্ট্র পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বা প্রতিনিধি কক্ষ অনুমোদন দিয়েছে। এই আইনের আওতায় সন্ত্রাসী সন্দেহে কাউকে আটক, বিচারের সম্মুখীন এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য তাকে আটক রাখার ক্ষমতা পাবে সামরিক বাহিনী।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এই সংশোধীত প্রস্তাবটি সম্প্রতি পাস হওয়া প্রতিরক্ষা বিলের অন্তর্ভূক্ত। গত বুধবার রিপাবলিকান দল নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি কক্ষে ৬৬ হাজার ২শ কোটি ডলারের একটি প্রতিরক্ষা বিল পাস হয়েছে।
এর আগে অবশ্য হোয়াইট হাউস এ বিলের ব্যাপারে আপত্তি করেছিল। তারা মনে করে, এই বিল সন্ত্রাস বিরোধী কর্মসূচিতে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্ব করবে।
হোয়াইট হাইসের মুখপাত্র জে কারনে এক বিবৃতিতে জানান, আইনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। উপদেষ্টারা এই বিলের বিরুদ্ধে ভোটো না দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে পরামর্শ দেবেন না।
এই বিলে ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং পাকিস্তানকে ৭০ হাজার কোটি অর্থ সহায়তা না দেওয়ার সুপারিশ রয়েছে। তবে এটি কার্যকর করতে হলে সিনেটে পাস হতে হবে। বৃহস্পতিবারই সিনেটে এ নিয়ে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।
এই বিল পাস হলে, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হামলা বা হামলার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কাউকে আটক করতে পারবে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
তবে হোয়াইট হাউসের চাপে যেটুকু পরিবর্তন আনা হয়েছে তা হলো- যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই, অন্য বেসামরিক তদন্ত এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় সামরিক বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। সংশোধনীতে আরও বলা হয়েছে, আটক সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে সামরিক কারাগার থেকে বেসামরিক কারাগারে পাঠানোর ব্যাপারে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা থাকবে।
তবে এই আইনটির সংশোধনীর স্বচ্ছতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। এফবিআইয়ের পরিচালক রবার্ট মুয়েলার এর সমালোচনা করে বলেছেন, সন্দেভাজনকে আটকের সময় এই সংশোধীত ধারাটি কীভাবে প্রয়োগ করা হবে তা পরিষ্কার নয়।
এদিকে মানবাধিকার কর্মীরাও এই বিলের সমালোচনা করেছেন। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের জ্যেষ্ঠ আইন উপদেষ্টা ক্রিসটোফার অ্যান্ডারস বলেছেন, এটা একটা বড় উদ্যোগ। এই আইন বলে, কোনও অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই বেসামরিক লোককে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক রাখার জন্য সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দিতে পারবেন প্রেসিডেন্ট। আর সন্দেহভাজন যে কোনও দেশের বা স্থানের হতে পারে তাতে কোনও বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
এ আইন বলে সামরিক বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে থেকে যে কাউকে আটক করে যুক্তরাষ্ট্রে এনে আটক রাখতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১১