জাতিগত নিধনের শিকার ক্ষুদ্র এই জনগোষ্ঠীর জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আসিয়ান প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন, টেকসই বাসস্থান ও প্রাণ সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব মিয়ানমার সরকারের।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে দ্রুত স্বভূমিতে ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গুতিয়েরেস বলেন, রোহিঙ্গাদের শুধু ফিরিয়ে নিলেই হবে না, বরং নিজভূমিতে তাদের শর্তবিহীন পুনর্বাসনে যথাযথ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে মিয়ানমারকে।
রোববার (৩ নভেম্বর) আঞ্চলিক প্রভাবশালী জোটটির এ সম্মেলনে গুতিয়েরেস যখন শীর্ষ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এমন বক্তব্য রাখছিলেন, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু কি। জাতিসংঘ মহাসচিবের সমালোচনামূলক বক্তব্যের সময় তাকে ‘ভাবলেশহীন’ দেখা যায়।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচারের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। তারও আগে থেকে কয়েক ধাপে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। তবে ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী যে অভিযান চালায় সেটাকে ‘জাতিগত নিধন’ ও ‘হত্যাযজ্ঞ’ আখ্যা দেয় জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। এই সংকটে ভূমিকার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমালোচনার তোপে পড়তে হয় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সু কিকে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে এ হত্যাযজ্ঞের যথাযথ কারণ উপস্থাপনে মিয়ানমার বারবার রোহিঙ্গাদের ‘সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে।
তবে শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক চাপ ও অবরোধের মুখে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে মিয়ানমার। চুক্তি অনুযায়ী দু’বছরের মধ্যে সব রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেয় দেশটি। তবে দু’বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন সম্পন্ন হয়নি।
রোববার (৩ নভেম্বর) জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, মিয়ানমার ক্ষুদ্র এই জাতিগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসনে বিলম্ব করছে। শিগগির রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে মিয়ানমার সরকারকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৯
কেএসডি/এইচএ/