ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

গাম্বিয়ার দেওয়া চিত্র অসম্পূর্ণ-বিভ্রান্তিকর: সু চি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
গাম্বিয়ার দেওয়া চিত্র অসম্পূর্ণ-বিভ্রান্তিকর: সু চি

গাম্বিয়া রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির অসম্পূর্ণ এবং বিভ্রান্তিকর বাস্তবচিত্র তুলে ধরেছে বলে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে মন্তব্য করেছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।

নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলা দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে অংশ নিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

মিয়ানমারের ক্ষেত্রে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্য’ একমাত্র অনুমান হতে পারে না উল্লেখ করে সু চি বলেন, যদি দেশের অভ্যন্তরে গণহত্যার উদ্দেশ্যে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে তবে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত সেনা সদস্য, কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‘এর বাইরে আমি এ বিষয়েও নিশ্চিত করছি যে, আমাদের সবার নজর সেনা সদস্যদের দিকে। একইসঙ্গে অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

রোহিঙ্গাদের ‘ভোগান্তি’র বিষয়টি স্বীকার করে সু চি তার বক্তব্যে আরো বলেন, ওই সময় রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি ছিল ‘জটিল’। যে কারণে অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।

সু চি তার বক্তব্যের শুরুতে আন্তর্জাতিক আইন ও সনদগুলোর বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে আদালত সহায়তা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নজিরবিহীন অভিযানকে তিনি বারবার ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দল’ উল্লেখ করে বলেন, স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বিশেষ করে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী সে সময় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এর বেশি কিছু নয়।  তিনি বলেন, ওই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবিলা করা।

দুই বছরে আগে ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো অভিযানকে ‘গণহত্যা’ উল্লেখ করে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চলতি বছরের নভেম্বরে ‘ইন্টারন্যাশন্যাল কোর্ট অব জাস্টিস’ (আইসিজে)-এ মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে তিন দিনব্যাপী সেই মামলার গণশুনানি শুরু হয়েছে।

প্রথম দিন মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ করার নির্দেশনা দিতে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছে গাম্বিয়া। নেদারল্যান্ডসের হেগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলায় গাম্বিয়ার আইনজীবীরা বারবার বলেন, ‘স্টপ জেনোসাইড’।  ওই সময় আদালতে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর ও বিবাদীপক্ষের এজেন্ট অং সান সু চিও উপস্থিত ছিলেন।

২০১৭ সালে গোটা বিশ্ব রাখাইনে সমকালের সবচেয়ে গণহত্যা প্রত্যক্ষ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ‘জেনোসাইড’ বা গণহত্যার মামলা করে গাম্বিয়া।

এ মামলার পরও ন্যায়বিচার পেতে আরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে রোহিঙ্গাদের। চূড়ান্ত রায় দিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বছরের পর বছর সময় নেন। কিন্তু আদালত চাইলে যেকোনো ধরনের অন্তর্বর্তী আদেশ দিতে পারেন।

আরও পড়ুন: এতো দেশ থাকতে গাম্বিয়া কেন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করলো?

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯/আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা
এইচএডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।