ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জলবায়ু চুক্তিতে একমত হতে পারছেন না বিশ্বনেতারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
জলবায়ু চুক্তিতে একমত হতে পারছেন না বিশ্বনেতারা ছবি: প্রতীকী

জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৫ এ একমত হতে পারছেন না বিশ্বনেতারা। গত ২ ডিসেম্বর শুরু হওয়া দু’সপ্তাহব্যাপী এ সম্মেলন ১৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কোনো ধরনের জলবায়ু চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারায় সম্মেলনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

খবরে বলা হয়, স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে চলমান জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৫ এর দু’সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও জলবায়ু পরিবর্তন সঙ্কট মোকাবিলায় এখনো কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেননি বিশ্বনেতারা।

চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য বিশ্ব প্রতিনিধিদের আরও ‘নমনীয়’ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এ সম্মেলনের সভাপতিত্বের দায়িত্বে থাকা চিলির পরিবেশমন্ত্রী ক্যারোলিনা স্মিথ সালদিভার।

লক্ষ্য হলো, ২০২০ সালের মধ্যেই কার্বন নিঃসরণ কমানোর নতুন প্রতিশ্রুতি আদায়। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নসহ জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিতে থাকা ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলো এ চুক্তিতে সম্মত হলেও, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও ভারতের মতো কার্বন নিঃসরণে শীর্ষে থাকা দেশগুলো মনে করছে, তাদের বর্তমান পরিকল্পনা পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন নেই।

প্রায় দুইশ’ দেশের প্রতিনিধিরা মাদ্রিদের এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। রোববার সকালে তাদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে, আরও নমনীয় হয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর আহ্বান জানান সম্মেলনের সভাপতি সালদিভার।

তিনি বলেন, এটি সহজ নয়, বেশ কঠিন, তবুও এটি প্রয়োজন। সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হলে আমার আপনাদের প্রয়োজন। আমাদের ওপর নির্ভর করে আছে আমাদের দেশের মানুষ।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সম্মেলন থেকে নতুন একটি খসড়া চুক্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যেই এ নতুন চুক্তির খসড়া করা হয়েছে।

লক্ষ্য হলো, বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়ার পরিমাণ গড়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা। তবে, বিজ্ঞানিদের মতে তাপমাত্রা বাড়ার ‘নিরাপদ সীমা’ হচ্ছে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীদের মধ্যে একজন আলডেন মেয়ের। তিনি বলেন, নতুন যে খসড়া চুক্তি করা হয়েছে, তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। কার্বন নিঃসরণ কমানোর পরিমাণ বাড়ানোর অঙ্গীকারের প্রতিফলন এতে নেই।

আগামী বছর গ্লাসগোয় অনুষ্ঠেয় জলবায়ু সম্মেলনের আগেই যদি বিশ্বনেতারা সঠিক উদ্যোগ না নেন, তাহলে ১ দশমিক ৫ তো দূরের কথা, তাপমাত্রা বাড়ার পরিমাণ ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখাই অসম্ভব হয়ে উঠবে।

অপরদিকে, ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারার পেছনে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, রাশিয়া, ভারত, চীন ও ব্রাজিলের ওপর দোষারোপ করছে ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর সমন্বিত সংগঠন এওএসআইএস।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রাকৃতিক সম্পদ প্রতিরক্ষা পরিষদের প্রতিনিধি জেইক স্মিথ বলেন, কার্বন নিঃসরণে শীর্ষ দেশগুলো বিশ্বের জলবায়ু সঙ্কটের জন্য ৮০ শতাংশ দায়ী। তারপরও সে দেশগুলো মাদ্রিদে নিশ্চুপ হয়ে রয়েছে। অথচ ছোট দেশগুলো ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, সামনের বছরগুলোয় তারা ক্ষতিকর গ্যাস নিঃসরণ কমানোয় কাজ করবে।

এদিকে শনিবার জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে না পারায় ব্যর্থ বিশ্ব নেতাদের ওপর হতাশ ও ক্ষুব্ধ জলবায়ু বিক্ষোভকারীরা সম্মেলন কেন্দ্রের বাইরে বিক্ষোভ করছিলেন।

>> মাদ্রিদে শুরু হলো জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৫

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।