ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বিশ্বকবির লেখা ভারতের জাতীয় সংগীত বদলাতে মোদীকে চিঠি বিজেপি নেতার

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২০
বিশ্বকবির লেখা ভারতের জাতীয় সংগীত বদলাতে মোদীকে চিঠি বিজেপি নেতার বিশ্বকবির লেখা ভারতের জাতীয় সংগীত বদলাতে মোদীকে চিঠি বিজেপি নেতার

বিশ্বকবি তথা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’র লেখা ভারতের জাতীয় সংগীতে বদল চেয়ে ১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন রাজ্যসভার বিজেপি সংসদ সদস্য সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।  

বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করেছেন মোদী।

আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।  

এমনিতে রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন লেখা নিয়ে সঙ্ঘের বিভিন্ন মহলে নানা সময়ে আপত্তির কথা শোনা গেছে। এমনকি মোদী ক্ষমতায় আসার পরে সঙ্ঘের শিক্ষা সেলের নেতা দীননাথ বাত্রা এনসিইআরটি’র পাঠ্যক্রম থেকে রবীন্দ্রনাথের লেখা বাদ দেওয়ার সুপারিশও করেছেন।

মোদী অবশ্য বাংলার বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে গত দু’বছরে নানা সময় রবীন্দ্রনাথের নানা কবিতা আবৃত্তি করেছেন। তার দলের অন্য নেতারাও ইদানীং বাংলায় এলে রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করতে ছাড়েন না। এই অবস্থায় সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর টুইট নতুন বিতর্ক উস্কে দিল।  

দেশের জাতীয় সংগীত ‘জন গণ মন’ নিয়ে সুব্রহ্মণ্যমের আপত্তি কেন? প্রবীণ এই বিজেপি সংসদ সদস্যের দাবি, শুধু তার নয়, দেশের যুব সমাজের বড় অংশের মনের কথা বলছেন তিনি। তার আপত্তির অন্যতম শব্দটি হল জাতীয় সংগীতে ‘সিন্ধু’ শব্দটির ব্যবহার।

স্বামীর মতে, বর্তমান জাতীয় সংগীতের কিছু কিছু শব্দ (সিন্ধু) অনাবশ্যক দ্বন্দ্ব তৈরি করে। বিশেষ করে স্বাধীনতা-পরবর্তী ভারতের পরিপ্রেক্ষিতে। রবীন্দ্রনাথের ‘জন গণ মন’র শব্দ বদলে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ)-র গাওয়া ‘জন গণ মন’র আদলে লেখা অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় সংগীত ‘কাওয়ামি তারানা’র প্রথম পংক্তি ‘শুভ সুখ চ্যান’ গানটি ব্যবহারের পক্ষে তিনি।

ইতিহাস বলছে, ১৯৪৩-এ সুভাষ বসুর নির্দেশে আইএনএ’র দুই সদস্য মুমতাজ হোসেন এবং কর্নেল আবিদ হাসান সাফরানি গানটি লিখেছিলেন। সুর দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন রাম সিংহ ঠাকুর। সুরের প্রভেদ বিশেষ অবশ্য ছিল না।

রবীন্দ্রনাথের ‘জন গণ মন’র প্রথম পংক্তিটি জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয় এবং তাতে ৫২ সেকেন্ড সময় লাগে। পক্ষান্তরে আইএনএ’র ‘কাওয়ামি তারানা’র প্রথম পংক্তিটি গাইতে সময় লাগে ৫৫ সেকেন্ড। জাতীয় সংগীতের শব্দ বদল প্রসঙ্গে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের একটি বক্তব্যের উল্লেখ করেছেন স্বামী। তা হলো, ১৯৪৯ সালে রাজেন্দ্র প্রসাদ বলেছিলেন, জাতীয় সংগীতের শব্দ পরিবর্তন বা সংশোধন করা যেতে পারে।

কিন্তু তাতেও স্বামীর সমস্যা মিটছে কই? যে ‘সিন্ধু’ শব্দটি নিয়ে স্বামীর আপত্তি, আইএনএ’র গাওয়া গানে তো তার উল্লেখ রয়েছে। তা ছাড়া, ‘সিন্ধু’ শব্দটি বাদ দিলে আরএসএসের অখণ্ড ভারতের তত্ত্বই যে প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়, সে কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন অনেকে। বিজেপি সাংসদ হিসেবে স্বামী কি তা হলে সঙ্ঘের তত্ত্ব এবং স্বপ্নকেই আঘাত করলেন, সে প্রশ্নও উঠছে। স্বামী অবশ্য এত কথায় ঢুকতে চাননি।  

তার মতে, আগামী বছর ২৩ জানুয়ারির মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করবে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২০

ওএফবি 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।