লল্ডন: ইংল্যান্ডে সন্ত্রাসী সন্দেহে আটক ৪ জন লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে বোমা হামলার ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করেছেন। ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করা মোহাম্মদ চৌধুরী, শাহ রহমান, গুরুকান্ত দেশাই এবং আব্দুল মিয়াকে আল কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে আটক করা হয়।
বুধবার ব্রিটেন কর্তৃপক্ষ এই খবর জানিয়েছে।
লন্ডন এবং কারডিফ থেকে তাদের আটক করার পর উলউইচ ক্রাউন কোর্টে তাদের বিচার চলছিল।
এদিকে একই অভিযোগে আটক অপর পাঁচ সন্দেভাজন জঙ্গি অন্য আরো কয়েকটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করেছেন।
দোষ স্বীকার করা এই নয় জনের বিরুদ্ধে আগামী সপ্তাহেই রায় ঘোষণা করা হবে।
এই নয়জনের সবাই ব্রিটিশ নাগরিক। তবে, মোহাম্মদ চৌধুরী ও শাহ রহমান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বলে জানানো হয়েছে। বাকিদের সঙ্গে পাকিস্তানি সংশ্রব রয়েছে। তারা সম্প্রতি নিহত আল কায়েদা নেতা আনোয়ার আল আওলাকির আদর্শে অনুপ্রাণিত বলে জানিয়েছেন।
কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী, লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে হামলার ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকারকারীরা ২০১০ সালের বড়দিনে ডাকে করে পাঁচটি বোমা বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল।
গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, আটক একজনের বাসায় পাওয়া হামলার লক্ষ্যবস্তুর নাম সম্বলিত হাতে লেখা একটি তালিকা পাওয়া গেছে। তাতে রয়েছে লন্ডনের মেয়র বরিস জনসন, দু’জন রাব্বির (ইহুদি ধর্মযাজক) নাম, মার্কিন দূতাবাস এবং লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ।
ব্রিটেনের সন্ত্রাসদমন পুলিশ ষিয়টি জানতে পারলে এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণের আগেই স্থগিত করে তারা।
সন্দেহভাজনদের আটক করার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তারা বিভিন্ন কট্টরপন্থী গ্রুপের সদস্য। ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন এবং গোপন বৈঠকের মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করতো। প্রশাসনের চোখ এড়াতে তারা বিভিন্ন পার্কে মিলিত হত।
আদালতে জানানো হয়েছে, মোহাম্মদ চৌধুরী (২১) এবং লন্ডনে তার সঙ্গী শাহ রহমান (২৮) ২০১০ সালের ২৮ নভেম্বর গোয়েন্দারের নজরে ছিলেন। বিগ বেন, ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবি, লন্ডন আই এবং ওয়েস্টমিনিস্টার প্যালেসে তাদের পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখা হয়।
চৌধুরী বসবাস করেন টাওয়ার হ্যামলেটে স্ট্যানলিফ হাউজে আর রহমান থাকতেন নিউহ্যামের সেন্ট বার্নান্ডর্স রোডে। লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের টয়লেটে দূরনিয়ন্ত্রিত বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করেছেন তারা।
অপর সন্দেহভাজন গুরুকান্ত দেশাই (৩০) কারডিফের আলবার্ট স্ট্রিটের বাসিন্দা এবং আব্দুল মিয়া (২৫) থাকেন কারডিফের নিনিয়ান পার্ক রোডে। তারাও একইভাবে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে বোমা হামলার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছেন।
অপরদিকে কারডিফের নেভিল স্ট্রিটের বাসিন্দা ওমর লতিফ (২৮) অন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটানোর কথা স্বীকার করেছেন।
আটক নয় জনের মধ্যে চারজন স্ট্যাফোর্ডাশায়ারের স্টক-অন-ট্রেন্ট গ্রুপের সদস্য। এরা শহরের পানশালাগুলোতে ঘরে তৈরি বোমা মারা পরিকল্পনা এবং সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিল।
পারসিয়া ওয়াকের বাসিন্দা উসামা খান (২০), বারমার্স ওয়াকের মোহাম্মদ শাহজাহান (২৭) এবং গ্রোভ স্ট্রিটের নজম হোসেইন (২৬) ৭ নভেম্বর কারডিফের রোথ পার্কে এবং ১২ ডিসেম্বর নিউপোর্ট পার্কে অভিযানের গোপন বৈঠক করার কথা স্বীকার করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১২