চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে এক কিশোরী। আত্মহত্যার আগে ওই মেয়েটি একটি চিরকুট (সুইসাইড নোট) রেখে গেছে।
আর এই ক্ষণস্থায়ী জীবন মেয়েটিকে শিখিয়েছে, ‘পৃথিবীতে কেবল মায়ের গর্ভ আর কবরই মেয়েদের জন্য নিরাপদ স্থান, আর কোথাও নয়’। এজন্যই চিরকুটের আশপাশের সবাইকে দায়ী করে গেছে অভিমানী মেয়েটি। সম্প্রতি মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের চেন্নাইয়ের উপকণ্ঠে।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে জানা যায়, শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) চেন্নাইয়ের উপকণ্ঠে নিজেদের বাড়ির একটি কক্ষ থেকে মেয়েটির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২১ বছর বয়সী এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে। আত্মহত্যার দিন মেয়েটির মা এক ঘণ্টার জন্য ঘরের বাইরে গিয়েছিলেন। তিনি বাজার থেকে ঘরে ফিরে তার মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতার হওয়া যুবক স্বীকার করেছেন। যুবকের সঙ্গে মেয়েটির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তিনি মেয়েটিকে হয়রানি করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ থেকে শিশু সুরক্ষাসংক্রান্ত আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
মেয়েটির কক্ষে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। এতে মেয়েটি লিখেছে, তার স্কুলও নিরাপদ নয়। শিক্ষকদের বিশ্বাস করা যায় না। এমনকি সে স্বপ্নেও মানসিক নির্যাতন দেখতে পেত। এ কারণে সে পড়াশোনা বা ঘুমাতে পর্যন্ত পারত না।
মেয়েটি চিরকুটে লিখেছে, ‘মেয়েদের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করার বিষয়টি প্রত্যেক মা-বাবাকে তাদের সন্তানদের, বিশেষ করে ছেলেদের শেখানো উচিত।
মেয়েটির চিরকুটে তিনটি সম্ভাব্য হয়রানির কথা উল্লেখ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে চিরকুটে লেখা হয়েছে ‘আত্মীয়, শিক্ষক, সবাই'।
চিরকুটে আরও লেখা রয়েছে, ‘যৌন হয়রানি বন্ধ করুন ‘। ‘আমার জন্য ন্যায়বিচার’ দিয়ে চিরকুটটি শেষ করা হয়েছে।
মেয়েটির আত্মহত্যার ঘটনা তদন্ত করছে পুলিশ। তার চিরকুটের ভিত্তিতে পুলিশ খতিয়ে দেখছে, মেয়েটি অন্য আরও কারোর মাধ্যমে যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছিল কিনা।
গত কয়েক সপ্তাহে যৌন হয়রানির কারণে তামিলনাড়ুতে চারটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে দুটির ক্ষেত্রে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২১
এএটি