ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

১৪ বছরেও অজানা বেনজির ভুট্টো হত্যার রহস্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১
১৪ বছরেও অজানা বেনজির ভুট্টো হত্যার রহস্য

দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে ১৪ বছর। তবুও সুরাহা হয়নি পাকিস্তানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো হত্যা মামলার।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকীতে দেশটির ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাওয়ালপিণ্ডির লিয়াকত বাগে নির্বাচনী সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বেনজির। স্বৈরশাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ তখন ক্ষমতায়। সেনাশাসনবিরোধী উত্তেজনায় উত্তাল ছিল সে সময়ের পাকিস্তান। হামলায় বেনজিরসহ তার দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) ২০ জন নেতাকর্মী নিহত হন, আহত হন আরও ৭০ জন।

এ ঘটনায় চারটি তদন্ত হয়। তদন্তকারীদের মধ্যে ছিল- পুলিশের যৌথ তদন্ত দল (জেআইট), কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফআইএ), জাতিসংঘ (ইউএন) ও স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। তবে তারা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করলেও কোনো ফল আসেনি। মামলাটি বর্তমানে লাহোর হাইকোর্টের রাওয়ালপিন্ডি বেঞ্চে বিচারাধীন।

মামলায় মোট ১২টি নথি দাখিল করা হয়, ৩৫৫টি হাজিরা রেকর্ড করা হয়। ১০ জন বিচারক পরিবর্তিত হন। ৬৮ জন প্রসিকিউশন সাক্ষীসহ মোট ১৪১ জন সাক্ষ্য দেন।

মামলায় মোট ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয় আটজনকে। হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত তালেবান কমান্ডার বায়তুল্লাহ মেহসুদ ড্রোন হামলায় নিহত হন। অন্য পাঁচ অভিযুক্ত বিভিন্ন স্থানে গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। বেনজিরের ওপর আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর নাম সাঈদ। তিনিও বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন।

পরে এফআইএ এই মামলায় দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফসহ সাবেক সিটি পুলিশ অফিসার (ডিআইজি) সৌদ আজিজ ও পুলিশ সুপার (এসপি) রাওয়াল খুররম শেহজাদকে আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করে। অবশ্য পরে তারা হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।

২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট বিশেষ সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের (এটিসি) বিচারক মুহাম্মদ আসগর খান রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে পাঁচ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। পলাতক ঘোষণা করা হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফকে। রায়ে তার বিরুদ্ধে স্থায়ী গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। জব্দ করা হয় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে হাইকোর্টে এ মামলার শুনানি হতে পারে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

পাকিস্তানে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টোর মেয়ে ছিলেন বেনজির। জেনারেল জিয়া-উল হকের আমলে জুলফিকার আলিকে ফাঁসি দেওয়া হয়। এরপর ১৯৯০-এর দশকে দুইবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন বেনজির। কিন্তু সেনাবাহিনী সবসময় তার বিরুদ্ধে লেগে ছিল। দুর্নীতির অভিযোগে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে তারা।

মৃত্যুর আগে তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিলেন বেনজির। আততায়ীর হাতে তার মৃত্যুর খবরে পাকিস্তানে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১
এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।