ঢাকা: উত্তর প্রদেশের সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে হারের নিষ্ঠুর স্মৃতি হয়তো মায়াবতীকে এখনো করে তোলে বিপর্যস্ত। কিন্তু নিজের সম্পদের লম্বা তালিকায় চোখ বুলিয়ে তিনি নিজেকে আবারো উৎফুল্ল করতে পারেন।
বিধান সভার নির্বাচনে গণেশ উল্টানোর পর মায়াবতীর লক্ষ্য এখন রাজ্যসভার গদি আঁটা চেয়ার। রাজ্যসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মনোয়নপত্র দাখিল করার সময় বের হয়ে আসে তার সম্পদের চমকপ্রদ বিবরণ। তার সম্পদের মধ্যে আছে জমি, বাড়িসহ ভূ-সম্পত্তি, হীরা আর সোনাসহ অলঙ্কার এবং নগদ অর্থ।
কমিশনকে দেয়া হিসেব অনুযায়ীই গত দুই বছরে তার সম্পদ ২৪ কোটি রুপি বেড়েছে। সবমিলিয়ে বর্তমানে মায়াবতীর সম্পদের মূল্য এখন ১১১ কোটি রুপি ছাড়িয়ে।
‘বেহেনজি’ বলে অভিহিত ভারতের অন্যতম দারিদ্র্যপীড়িত ও জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশের বঞ্চিত ও দলিতদের আওয়াজ হিসেবে পরিচিত এই সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর সম্পদের ভাঁড়ারে আছে ৩৮০ ক্যারেটের খাঁটি হীরে। সোনাও আছে তবে ভরিতে নয় কেজিতে। আর তার সংগ্রহে থাকা সিলভার ডিনারসেটের ওজন প্রায় ২০ কেজি, দাম মাত্র ৯ লাখ রুপি।
তার স্থাবর সম্পত্তি বেশির ভাগই ভূ-সম্পত্তি যার দাম প্রায় ৯৬ কোটি রুপি। দিল্লির অভিজাত কনাথ প্লেসে রয়েছে তার দুটি দোকান। দিল্লির অভিজাত আবাসিক এলাকা সরদার প্যাটেল মার্গে রয়েছে ৬২ কোটি রুপি দামের বাড়ি। পড়তে পড়তে ক্লান্ত না হলে আরো পড়তে পারেন, উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্মৌয়ে থাকা তার বাড়ির দামও ১৫ কোটি রুপির ওপরে। অথচ ২০১০ এর মে মাসেও দাখিল করা হিসেবে অনুযায়ী তার সম্পদ ছিল ৮৭ কোটি রুপির। অর্থাৎ দুই বছরের ব্যবধানে তার সম্পদ বেড়েছে ২৪ কোটি রুপি।
যে দলিতদের মাথায় কাঠাল ভেঙে তিনি ক্ষমতায় গিয়েছিলেন সেই দলিতরা এখনো দুইবেলা ঠিকভাবে খেতে পারেন না। ক্ষমতার স্বার্থে তিনি সমঝোতা করেছিলেন উত্তর প্রদেশের বর্ণ হিন্দুদের সঙ্গে, যাদের হাতেই কিনা এই দলিতরা যুগ যুগ ধরে ছিল নিপীড়িত আর অবহেলিত।
কিন্তু এবার আর শেষরক্ষা হয়নি মায়াবতীর। তার সাজানো পাশার দান উল্টে দিলো সেই পাশার ঘুটি হিসেবে পরিচিত দলিতরাই । মূলত দলিত আর মুসলিম ভোট না পাওয়াই কাল হয়েছে মায়াবতীর জন্য। মায়াবতীর সম্পদের তালিকা আর বিলাসিতার দিকে চোখ বোলালেই পরিষ্কার হয়ে যায় কেন দলিতরা তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এবারের নির্বাচনে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১২