ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে খুলনার দারুল উলুম মসজিদ

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২৪
মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে খুলনার দারুল উলুম মসজিদ

খুলনা: অপূর্ব সৌন্দর্যের কারুকার্য খচিত খুলনার তালাবওয়ালা জামে মসজিদ (দারুল উলুম মসজিদ) জৌলুস দিন দিন যেন বাড়ছে।  

মসজিদ এলাকায় প্রবেশ করতেই চোখ জুড়িয়ে যায় সবার।

কৃত্রিম কারুকার্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একাত্মতা ঘটায় অপরূপ এক মোহনীয় পরিবেশ বিরাজ করছে এই মসজিদে।  

এই মসজিদে সহজেই দেখা মিলবে অর্কিড, বনসাই, সাইকাস পাইনাসসহ নানা ধরনের শোভা বর্ধনকারী উদ্ভিদের।

মসজিদের সৌন্দর্য বাড়াতে চারদিকে স্থাপন করা হয়েছে লাইটপোস্ট। নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনাও।  

এ মসজিদটিতে রয়েছে সুবিশাল মিনার। যার উচ্চতা ২২৬ ফুট। খুলনা বিভাগের সর্বোচ্চ মিনার এটি। মসজিদ ও মিনারটির পুরোটাই সাদা টাইলস দিয়ে তৈরি।  

নান্দনিক কারুকার্য খচিত অংশগুলো রাতের বর্ণিল আলোকসজ্জায় আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। যা দেখতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসে লোকজন।  

মসজিদের প্রধান গেটকে বলা হয় ‘তালাবওয়ালা শাহী গেইট’। মসজিদসংলগ্ন রয়েছে বিশাল মাদরাসা। যার নাম ‘জামিআ ইসলামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম মাদরাসা’।  

মসজিদ ও মাদরাসা প্রতিষ্ঠাতা এ অঞ্চলের বিখ্যাত দানবীর মরহুম আব্দুল হাকিম জোমাদ্দার।

সৌন্দর্যমণ্ডিত মসজিদ ও মাদরাসা

মিনার ছাড়াও মসজিদটিতে রয়েছে চারটি গম্বুজ। যেখান থেকে প্রতিদিন পাঁচবার আজানের ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে।  

এছাড়া এখানে রয়েছে আধুনিক শৌচাগার, অজুখানা, গোসলখানা। মিম্বরে থাকা ইমাম সাহেবের জায়নামাজের নিচেই আছে সুবৃহৎ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের চামড়া।  

মসজিদটির চারপাশে দেওয়ালে শোভা পাচ্ছে হরিণের চামড়ার ওয়ালমেট। যেখানে খোদাই করে লেখা আছে বিভিন্ন ধরনের কোরআন ও হাদিসের বাণী।  

মসজিদটিতে রমজান মাসে তারাবির নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ নিয়মে ২৭ রমজান যেখানে কোরআন খতম করা হয়।

প্রাচীন এই মসজিদটির খতিব মাওলানা মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এই মসজিদে ২ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।

২ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন এই মসজিদে

লেখক বেলায়েত হুসাইনের তথ্য মতে, দারুল উলুম খুলনা বিভাগের অন্যতম প্রধান দ্বিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। খুলনা মহানগরীর মুসলমান পাড়ায় ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ মাদরাসাটি জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম খুলনা নামে প্রসিদ্ধ।

আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.)-এর অনুপ্রেরণায় বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম হাজি আবদুল হাকিম জমাদ্দারের পৃষ্ঠপোষকতায় মাওলানা মুজিবুর রহমান (রহ.) এটি প্রতিষ্ঠা করেন। মাদরাসার বর্তমান অধ্যক্ষ মাওলানা মুশতাক আহমদ।

২০০০ সালে ইসলামী আইন গবেষণা অনুষদ (ইফতা) এবং তাফসির বিভাগ চালু করা হয়। মাতৃভাষা বাংলা ছাড়াও আরবি, উর্দু ও ফার্সি ভাষা শেখানো হয় এ মাদরাসায়। আবাসিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় এতিম ও দরিদ্রদের শিক্ষাগ্রহণে বিশেষ সুযোগ আছে।

ঐতিহ্যবাহী এই মাদ্রাসাটির মুহতামিম হাফেজ মাওলানা মোশতাক আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, মাদরাসাটিতে বর্তমানে দেড় হাজারের অধিক ছাত্র রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৭০০ ছাত্র আবাসিক। তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যকস্থা মাদরাসা কর্তৃপক্ষই করে থাকে। কোনো সরকারি সাহায্য ছাড়াই মাদরাসাটি পরিচালিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, মার্চ ২৩,  ২০২৪
এমআরএম/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।