ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

কিয়ামতের দিন নামাজ নাজাতের সম্বল হবে, তবে...

মাহফুজ আবেদ, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৪ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৭
কিয়ামতের দিন নামাজ নাজাতের সম্বল হবে, তবে... সফলতা লাভ করবে তারা যারা নামাজের শিক্ষাকে (জীবনে) সংরক্ষণ করে

হজরত আমর বিন শুয়ায়িব (রা.)-এর বর্ণনায় হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের সন্তানদেরকে নামাজের নির্দেশ দাও যখন তারা সাত বছরে উপনীত হয়। আর দশ বছর হলে নামাজের জন্য প্রয়োজনে প্রহার করো এবং বিছানা পৃথক করো। -সুনানে আবু দাউদ

অন্য আরেক হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা)-এর বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে অন্য জুমা, এক রমজান থেকে অন্য রমজান কাফফারা হয় সে সব গুনাহর জন্য যা এ সবের মধ্যবর্তী সময়ে ঘটে থাকে, যদি কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা হয়।  

সালাতকে আমরা নামাজ হিসেবেই জানি।

এর অর্থ নত হওয়া, অবনত করা, বিস্তৃত করা। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দাঁড়িয়ে, বসে, উপুড় হয়ে বিভিন্নভাবে কোরআন পড়া ও দোয়া করাকে নামাজ বলা হয়।

কোরআন-হাদিসে অসংখ্য স্থানে নামাজের নির্দেশ এসেছে। বলা হয়েছে উপকারিতাও। নামাজের আলোকে মুসলমানদের জীবন গড়া অন্যতম কর্তব্য। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তুমি কি দেখেছ, মুসলমানদের মধ্যে কে ইসলাম ও আখেরাতকে মিথ্যা প্রমাণিত করছে! যে এতিমকে অবহেলা করে, আর দুঃস্থকে খাদ্য দিতে উদ্বুদ্ধ করে না। আর সেই নামাজিদের জন্য ধ্বংস (ওয়ায়েল দোজখ), যারা নিজ নামাজের বিষয়ে উদাসীন, যাদের কাজ লোক দেখানো। যারা মানুষকে স্বাভাবিক প্রয়োজনীয় জিনিস দানেও বিরত থাকে। ’ –সূরা মাউন

বর্ণিত সূরার আয়াত থেকে বোঝা যায়- শুধু নামাজ পড়লেই হবে না, তার শিক্ষা মেনে চলতে হবে। সমাজের এতিম ও দুঃস্থদের সাহায্য করতে হবে। মানুষের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াতে হবে।

আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমিই আল্লাহ, আমি ছাড়া আর কোনো হুকুমকর্তা নেই। অতএব তুমি একমাত্র আমারই দাসত্ব করো এবং স্মরণ রাখার জন্য নামাজ কায়েম করো। ’ -সূরা ত্বহা: ১৪

কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ তোমাকে অন্যায় অশ্লীলতা ও দুষ্কর্ম থেকে রক্ষা করবে। ’ -সূরা আনকাবুত: ৪৫
কোরআনে কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘সফলতা লাভ করবে তারা যারা নামাজের শিক্ষাকে (জীবনে) সংরক্ষণ করে। ’ -সূরা মুমিন: ৯

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.)-এর বর্ণনায় হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করবে, নামাজ তার জন্য আলো ও দলিল হবে এবং কিয়ামতের দিন নাজাতের সম্বল হবে। আর যে তা করবে না তার জন্য আলো, দলিল বা নাজাতের সম্বল হবে না। ওই ব্যক্তি কিয়ামতের দিন কারুন, ফিরাউন, হামান ও উবাই ইবনে খালফের সঙ্গী হবে। ’ –আহমাদ, দারেমি ও বায়হাকি

হজরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.)-এর বর্ণনায় আছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) রাতের নামাজের শেষে দোয়া করতেন, ‘হে আমার প্রভু! আমাকে আলো (নূর) দাও অন্তরে, জবানে, দৃষ্টিতে ও শ্রবণে। আলো দাও ডানে, বামে, উপরে, নিচে, সামনে ও পেছনে। হে প্রভু! আমাকে আলো দাও। সে আলোকে প্রশস্ত ও বিস্তৃত করে দাও। ’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম

সিজদায় পড়ে অনেক দোয়ার মতো এটিও পড়তেন, হে আমার প্রভু! আমাকে ক্ষমা করো, আমার প্রতি রহম করো, তোমার আনুগত্যে আমাকে বাধ্য রাখ। আমাকে সুপথ দাও, আমার মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে দাও। আমাকে সুস্থ রাখ, জীবিকা দান কর।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।