ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

‘আলোকিত যুব সমাজই গড়তে পারে পাপমুক্ত মানবিক বিশ্ব’

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৭
‘আলোকিত যুব সমাজই গড়তে পারে পাপমুক্ত মানবিক বিশ্ব’ চট্টগ্রাম লালদীঘি ময়দানে মুনিরীয়া যুব তবলিগের গাউছুল আজম কনফারেন্সে বক্তব্য রাখছেন অতিথিরা 

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসতে হবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে, নবীর জীবনাদর্শে গড়তে হবে জীবন, নিজের সবকিছু উজার করে দিতে হবে নবীর ভালোবাসায়।

এভাবে ভালোবেসে মুসলিম মিল্লাতকে নবীপ্রেমিক খাঁটি উম্মত হওয়ার রূপরেখা দিয়ে গেছেন কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা হজরত গাউছুল আজম (রহ.)।  

চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটির উদ্যোগে গাউছুল আজম কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাগতিয়া আলিয়া গাউছুল আজম দরবারের পীর আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ আহমদী এসব কথা বলেন।

 

বিশ্বব্যাপী মুসলিম জাতি বিশেষ করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নিযার্তন এবং মুসলমানদের প্রথম কেবলা বায়তুল মোকাদ্দাসধন্য ফিলিস্তিনের রাজধানী জেরুজালেম দখলের যে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে এর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এসব ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করতে হলে মুসলমানদের তরিকতের চর্চায় রূহানী শক্তিতে জাগরিত ও দৃঢ় ঈমানি চেতনায় তেজোদীপ্ত হতে হবে, মুসলিম মিল্লাতের ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে সুদৃঢ় করতে হবে।  

প্রধান অতিথি যুব সমাজের উদ্দেশ্যে বলেন, আলোকিত যুব সমাজ গড়তে পারে একটি পাপমুক্ত মানবিক বিশ্ব। আর এ ধরনের আলোকিত যুব সমাজ গড়তে বিশ্বব্যাপী কাজ করছে কাগতিয়া দরবার ও মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটি।  

অরাজনৈতিক আধ্যাত্মিক এ সংগঠনের সম্মেলনকে ঘিরে লালদীঘি ময়দান ও আশপাশের এলাকায় মানুষের ঢল নামে। বাদে জোহর শুরু হয় সম্মেলনের মূল কার্যক্রম। মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে নবীপ্রেমিক মানুষ সম্মেলনে যোগ দেন। সম্মেলনকে ঘিরে লালদীঘি ময়দান সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। সুউচ্চ দৃষ্টিনন্দন মঞ্চের পাশাপাশি মুসল্লিদের বসার জন্য ছিল সুব্যবস্থা। সুশৃঙ্খল পরিবেশে আগত মুসল্লিরা সেখানে জোহর, আসর, মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করেন।  

গভীর রাত পর্যন্ত চলে সম্মেলনের কার্যক্রম। দেশ জাতি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনার মধ্যদিয়ে সম্মেলন শেষ হয়।

কনফারেন্সে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর এ কে এম ছায়েফ উল্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মোহম্মদ নেজাম উদ্দিন।  

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে কনফারেন্সে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, কাউন্সিলর মোহাম্মদ হাসান মুরাদ বিপ্লব, আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ ইবরাহিম হানফি, আল্লামা মুফতি আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকি, আল্লামা মোহাম্মদ আশেকুর রহমান, আল্লামা এমদাদুল হক মুনিরি, আল্লামা মোহাম্মদ সেকান্দর আলী ও আল্লামা মুহাম্মদ মুহাম্মদ ফোরকান প্রমুখ।

কনফারেন্সে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাছবাড়ীয়া সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক  মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, নাজিরহাট বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম মহসিন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মো. মুহিউদ্দীন, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মো. গোলাম কিবরিয়া, মোহাম্মদ বোরহানুল সালেহীন চৌধুরী, মোহাম্মদ ওসমান গণি ও গহিরা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আবছার।  

কনফারেন্স সার্বিক সমন্বয় করেন মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটি বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক মুহাম্মদ ফোরকান মিয়া।

গাউছুল আজম কনফারেন্সকে ঘিরে নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও সড়ক মোড়ে ফেস্টুন, ব্যানার এবং আলোকসজ্জা করা হয়।  

নগরীর প্রবেশপথগুলোতে দৃষ্টিনন্দন তোরণ নির্মাণ করা হয়। দেশের বাইরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, আবুধাবি, শারজা, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, আমেরিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে কাগতিয়া দরবারের অনুসারীরা সম্মেলনের যোগ দেন। কনফারেন্সে দেশবরেণ্য আলেম-উলামা, শিক্ষাবিদ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, চিকিৎসক, শিক্ষক ও আইনজীবীসহ সর্বস্তরের জনতা শরিক হন।  

সুশৃঙ্খল এই কনফারেন্সে তরুণ-যুব সমাজের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।