ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

আমাদের শেরে বাংলা

ইচ্ছেঘুড়ি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১২
আমাদের শেরে বাংলা

ঢাকা: অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী আবুল কাশেম ফজলুল হকের নাম তোমরা নিশ্চয়ই শুনেছ। কিন্তু তোমরা কী জানো, তার আরো একটি পরিচয়।

হ্যাঁ, তার আরো একটি পরিচয় আছে। তাকে বলা হয় ‘শেরে বাংলা’। যার অর্থ বাংলার বাঘ।

ফজলুল হক ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর ত‍ৎকালীন বাকেরগঞ্জ জেলার সাটুরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম কাজী মুহাম্মদ ওয়াজেদ এবং মায়ের নাম সাঈদুন্নেসা খাতুন। তার পড়াশোনা শুরু হয় স্থানীয় মাদ্রাসায়। পরবর্তীতে তিনি বরিশাল জিলা স্কুলে ভর্তি হন।

এই জিলা স্কুল থেকেই ১৮৯০ সালে তিনি এন্ট্রান্স (এসএসসি) পাস করেন। কলকাতা থেকে ১৮৯২ সালে পাস করেন এফএ (এইচএসসি)। এরপর কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে রসায়ন, গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানে সম্মানসহ বিএ পাস করেন। ১৮৯৭ সালে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে এমএ পাস করেন একে ফজলুল হক।

উপমহাদেশের তৎকালীন রাজনৈতিক অঙ্গনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন একে ফজলুল হক। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপালন করেন। ১৯১৮-১৯ সাল সময়কালে তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন। এরপর ১৯৩৫ সালে হিন্দু নেতা নলিনী বাবুকে পরাজিত করে তিনি কলকাতার প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হন।

অকৃত্রিম মানবিক গুণের অধিকারী এই নেতা ক্ষমতায় গিয়ে ঋণ সালিশী বোর্ডের মাধ্যমে মহাজনদের ঋণের টাকা কিস্তিতে আদায় করার ব্যবস্থা করে গরীব চাষীদের ওপর দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। এ কারণে তাকে ‘গরীবের নেতা’ও বলা হয়ে থাকে। তবে তিনি কিন্তু শুধু গরীবের নেতাই ছিলেন না। তিনিই ছিলেন গরীবের প্রকৃত দরদী বন্ধুও।

১৯৩৭-১৯৪৩ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী। ১৯৫৫-৫৬ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ১৯৫৬-৫৮ সাল পর্যন্ত পূর্বপাকিস্তানের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন একে ফজলুল হক।

১৯১৩ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে একে ফজলুল হক বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯১৪ সালে নিখিল ভারত কংগ্রেস দলে যোগ দেন। ১৯১৮ সালে তিনি ভারতীয় কংগ্রেসের সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হন।

১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহোরে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের অধিবেশনে ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের উপস্থাপক ছিলেন একে ফজলুল হক।

পরবর্তী সময়ে এই লাহোর প্রস্তাবই পাকিস্তান প্রস্তাব হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকায় ইন্তেকাল করেন গরীবের নেতা একে ফজলুল হক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরের পাশে তিন নেতার মাজার হিসেবে পরিচিত সমাধি সৌধে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও খাজা নাজিমুদ্দিনের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন শেরে বাংলা অর্থাৎ বাংলার বাঘ একে ফজলুল হক। ।


বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১২

সম্পাদনা: আরিফুল ইসলাম আরমান, নিউজরুম এডিটর; আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।