ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

মা তোমাকে অনেক ভালোবাসি

আরিফুল ইসলাম আরমান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১২
মা তোমাকে অনেক ভালোবাসি

তোমাদের সবার কাছেই মা শব্দটি অনেক প্রিয়। শুধু তাই নয়, মাকে যে তোমরা সবার চেয়ে বেশি ভালোবাসো তাও জানি।

কারণ এই মায়ের হাত ধরেই তুমি এ পৃথিবীর আলো দেখেছ।

তুমি যেখানেই থাকো না কেন ছোট্ট এই শব্দটি তোমাকে প্রতিমুহূর্তে মনে করিয়ে দেয় মা’র গভীর ভালোবাসার কথা।

তোমাদের মতো আমিও মাকে ভালোবাসি প্রতিদিন। কিন্তু এই ভালোবাসাকে আবারও একটু মনে করিয়ে দিতে প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক মা দিবস।

কিন্তু কিভাবে মা দিবসটির সূচনা হলো, তা কি তোমরা জানো?

মা দিবস উদযাপন প্রথম শুরু হয় গ্রিসে। গ্রিকরা তাদের মাতা-দেবীর পূজা করত। যার নাম হল ‘রিয়া’। এটা ছিল তাদের বসন্তকালীন উৎসবের একটি অংশ।

প্রাচীন রোমেও এ রকম দিবস উদযাপন করা হতো ‘সাইবল’ দেবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর উদ্দেশ্যে। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস মতে ‘সাইবল’ হল সকল দেব-দেবীর মাতা।

ইতিহাস খুঁজে দেখা যায়, খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ৫০ সালে রোমে ধর্মীয় উৎসব হিসাবে একটি দিবস পালন করা হতো, যার নাম ছিল ‘হিলারিয়া’। এর অর্থ দেবী মাতা ‘রিয়া’র সম্মানে। এ উৎসব উদযাপনের সময় ছিল ১৫ই মার্চ থেকে ১৮ই মার্চ।

গ্রিক ও রোমান পৌত্তলিক সমাজে দেব-দেবীদের মায়ের প্রতি ধর্মীয়ভাবে শ্রদ্ধা জানাতে এসব দিবস পালন করা হত- এটাই পরবর্তীকালে মা দিবস হিসাবে চালু করা হয়েছে বিভিন্ন দেশে।

আমেরিকার ‘অ্যানম জারাফস’ নামের এক নারী চিন্তাবিদের কল্যাণে আধুনিককালে মা দিবস চালু হয়। তিনি নিজের মাকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন, মায়ের ভালোবাসা অক্ষুণ্ন রাখতে জীবনে বিয়ে পর্যন্ত করেননি। তিনি পড়াশোনা করেছেন পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় চার্চ নিয়ন্ত্রিত একটি স্কুলে।

তার মায়ের মৃত্যুর দু’বছর পর তিনি সরকারের কাছে দাবি করলেন- মায়ের স্মরণে একদিন সরকারি ছুটি দিতে হবে। তার অনুভূতি হল, মায়েরা সন্তানদের জন্য সারাজীবন যা করেন- তা সন্তানরা অনুভব করে না।

অপরদিকে, মা দিবসকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার লক্ষ্যে ১৮৭২ সালে জুলিয়া ওয়ার্ড নামের এক ব্যক্তি লেখালেখি শুরু করেন। ১৮৭২ সালের মে মাসের দ্বিতীয় রোববার নিজের মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে তিনি নিজে ‘মা দিবস’ পালন করেন। এরপর ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন দিবসটিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেন।

যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস ১৯১৩ সালের ১০ মে মা দিবসকে সরকারিভাবে পালনের অনুমোদন দেয়। সে মোতাবেক পরবর্তীতে তারা মে মাসের প্রথম রোববারকে মা দিবস হিসেবে পালনের জন্য নির্ধারণ করে নেয়।

পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের অনুকরণে মেক্সিকো, কানাডা, লাতিন আমেরিকা, চীন, জাপান ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে শুরু হয় মা দিবস পালন।

যদিও আমেরিকায় এটা পালিত হয় মে মাসের প্রথম রোববার, কিন্তু অন্যান্য দেশে কিছুটা ব্যতিক্রম দেখা যায়। যেমন, নরওয়েতে মা দিবস পালিত হয় মে মাসের দ্বিতীয় রোববার। আর্জেন্টিনায় পালিত হয় অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় রোববার। দক্ষিণ আফ্রিকায় পালিত হয় মে মাসের প্রথম রোববার। ফ্রান্সে ও সুইডেনে পালিত হয় মে মাসের শেষ রোববার। জাপানে পালিত হয় মে মাসের দ্বিতীয় রোববার। বাংলাদেশেও মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস হিসেবে উদযাপন করেন অনেকে।

তোমাদের সবাইকে মা দিবসের শুভেচ্ছা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১২

সম্পাদনা: আহসান কবীর, আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।