সবচেয়ে বড় আর সবচেয়ে ছোট’র হিসেবটা বরাবরই মজার, তাই না? এবার তবে বলো, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ফুলটি ঠিক কতটা বড় বলে তোমার ধারণা? একটা গামলার সমান? নাকি গরুর গাড়ির চাকার সমান?
তারচেয়েও বড়! তোমার চাইতেও লম্বা, এমনকি যে কোন লম্বা মানুষও এই বিশাল ফুলের পাশে দাঁড়ালে তাকে রীতিমত ক্ষুদে দেখাবে, এতটাই বড়!
এই দৈত্যাকার ফুলের নাম কী, কোথায় হয়, কেমন দেখতে? আর এর গন্ধইবা কেমন? জানতে ইচ্ছে করছে তো?
পৃথিবীতে এরকম বিশাল ফুলের দুটি প্রজাতির আছে- র্যাফেশিয়া আরনোল্ডি আর টাইটান।
এদের কিন্তু সচরাচর টবে ফোটা গোলাপ ফুলের মত আমরা দেখতে পাই না।
ইন্দোনেশিয়ার রেইনফরেস্টে র্যাফেশিয়া আরনোল্ডি ফুলটি ফোটে। ফোটার পর এটি লম্বায় তিন ফুটকেও ছাড়িয়ে যায়, আর ওজন হয় ১৫ পাউন্ডেরও বেশি । তবে অদ্ভুত কথা কি জান? এই ফুলের গাছটি কিন্তু পরজীবী। মানে এরা অন্য কোনো গাছের ওপর ভর করে তার থেকে পুষ্টি নিয়ে বাঁচে। বোঝো, অন্যের খাবার খেয়ে কিনা অ্যাত্ত বড় ফুল!
র্যাফেশিয়া আরনোল্ডি ফুলটি যখন ফোটে, তখন এমনই উৎকট গন্ধ ছড়ায় যেন এটা একটা পচা মাংসের স্তুপ।
অন্যদিকে নাম আলাদা হলেও দৈত্যাকৃতির টাইটানও কিন্তু ফোটার পর একই রকমের পচা গন্ধ ছড়ায়।
কিন্তু কেন এই দুর্গন্ধ?
আসলে এই দুই জাতের ফুলই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে, নিজেদের বংশ বিস্তারে পরাগায়নের জন্য পোকামাকড়কে আকর্ষণ করে। টাইটান, নিজের পচা এই গন্ধের জন্য র্কপ্স ফাওয়ার বা শবদেহের ফুল নামেও পরিচিত।
একটি টাইটানের ওজন হয় ১৭০ পাউণ্ডেরও বেশি। লম্বায় এটি সাত ফুটকে ছাড়িয়ে প্রায় ১২ ফুট পর্যন্ত হয়।
আসলে এই টাইটান হাজারও খুদে খুদে ফুলের সমষ্টি।
টাইটান পুরোপুরি ফোটার জন্য তিন ঘন্টার বেশি সময় নেয়। ফোটার পরে একদিন থেকে দুই দিন বেঁচে থাকে।
এই ফুলটিও ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা রেইনফরেস্টে বেশি ফোটে।
তবে চিন্তার কথা হলো, বিজ্ঞানীরা বলছেন, এতো বেশি গাছ কেটে ফেলা আর পাম গাছ লাগানোর কারণে এই প্রজাতির ফুল গাছ বিলীন হতে বসেছে । সেই সঙ্গে এসব জঙ্গলের নিয়মিত দাবানলের কবলে পড়েও বেচারা গাছগুলো পুড়ে যায়।
তারপরেও গাছ ভালোবাসেন এমন কিছু মানুষ কিছু বোটানিক্যাল গার্ডেনে এখনও গাছগুলিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।
মানুষের ভালোবাসায় র্যাফেশিয়া আরনোল্ডি আর টাইটান বেঁচে থাকুক অনেক অনেকদিন। আর তাদের বিশাল আকৃতি দেখে চোখ কপালে তুলুক আরো হাজারো মানুষ। তুমি যে ঠিক এটাই চাও, তাতো আমি জানি-ই।