সংসারের নানা দু:খ কষ্টের মধ্যে জন্ম নেয়া সন্তানটির নামা রাখা হয় দুখু মিয়া। ছোট্ট সেই দুখু মিয়া একদিন অনেক বড় হয়েছিলেন।
ফকির আহমদের ছিল তিন ছেলে আর এক মেয়ে। প্রথম সন্তানের জন্মের পর তার পরপর চারটি সন্তানের মৃত্যু হয়। এরপর নজরুলের জন্ম। মহান এই কবি ১৮৯৯ সালের ২৫ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চুরুলিয়া গ্রামের জন্মগ্রহণ করে।
নজরুল কিন্তু শুধু কবিই ছিলেন না। একই সাথে তিনি গীতিকার, সুরকার, সাংবাদিক, রাজনীতিবীদ, সৈনিক, দার্শনিকও ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ দুই বাংলাতেই তাঁর কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তাঁর কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁকে বিদ্রোহী কবি বলা হয়। তাঁর কবিতা ও গানে এই মনোভাব প্রতিফলিত হয়েছে সবসময়।
অস্বচ্ছল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করা নজরুলের প্রাথমিক শিক্ষা ছিল ধর্মীয়। স্থানীয় এক মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে কাজ করলেও সেসময় তিনি বিভিন্ন থিয়েটার দলের সাথে কাজ করতেন। একটু বড় হয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর তিনি সাংবাদিকতায় যোগ দেন। এসময় তিনি কলকাতাতেই থাকতেন।
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে থাকা অবসস্থায় তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। এসময় তিনি প্রকাশ করেন তাঁর ঐতিহাসিক বিদ্রোহী এবং ভাঙার গানের মত কবিতা। একারণে তাকে জেলেও যেতে হয়েছে। ছোট গল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত।
তোমাদের জন্য অনেক মজার ছড়া লিখেছেন নজরুল। তার লেখা পিলে পটকা, খাঁদু-দাদু, মট্কু মাইতি, লিচুচোর আর খুকি ও কাঠবিড়ালীর মতো শিশুতোষ মজার ছড়া অন্য কোন কবি আজও লিখেতে পারেননি।
বাংলা কাব্য তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। এটি হল ইসলামী সঙ্গীত তথা গজল। বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে ঢাকা আসেন। এসময় তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়। এদেশেরই তিনি ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১২
সম্পাদনা: আরিফুল ইসলাম আরমান, বিভাগীয় সম্পাদক, ইচ্ছেঘুড়ি