স্কুলে ইংরেজি রাইমস ও কমিকস্ বই নিশ্চয়ই তোমাদের সবার প্রিয়! ওই বইগুলোর ছবি ও কথা তোমাদের খুবই মজা লাগে। কিন্তু তোমরা কি জানো শতবছর আগেই এ ধরনের আজব ও হাসির চরিত্র এই বাংলা ভাষাতেই তৈরি হয়েছিল? ‘কাতুকুতু বুড়ো’, ‘হাসজারু’, ‘রামগরুড়ের ছানা’, ‘বকচ্ছপ’, ‘পাগলা দাশু’, ‘টিয়ামুখো গিরগিটি’ কিংবা ‘হাতিমি’- এদের কথা কি তোমরা কেউ শুনেছো? ছড়া লেখার পাশাপাশি এসবের সঙ্গে ছবিও এঁকেছিলেন তিনি।
এতোক্ষণ যার কথা বলছিলাম, তাকে কী তোমরা চিনতে পারছো? তিনি আর কেউ নন, আমাদের সবার প্রিয় সুকুমার রায়।
বাংলা ১২৯৪ সালের ৩০ অক্টোবর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। আর মাত্র ৩৬ বছর বয়সে তিনি মারা যান। স্বল্প জীবনকালে প্রতিভার ছাপ রেখেছেন ফটোগ্রাফি, মুদ্রণ, ছবি আঁকা এবং অবশ্যই সাহিত্যে।
সুকুমার রায় রচিত শিশুদের সুপাঠ্য ছড়া, কবিতা, গল্প এবং নাটকের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, কখনও বা নির্মল হাস্যরস। পাগলা দাশু কিংবা ভবদুলাল, হেড অফিসের বড়বাবু অথবা হেঁশোরাম হুঁশিয়ার। শুধু তোমাদের মতো শিশুরাই নয়, বড়দের চরিত্রেও সুকুমার রায়ের প্রতিভার অনেক প্রভাব রয়েছে।
তোমাদের জন্য লেখা প্রসঙ্গে আবোল তাবোল বইয়ের ভূমিকায় সুকুমার রায় বলেছেন, ‘যাহা আজগুবি, যাহা উদ্ভট, যাহা অসম্ভব, তাহাদের লইয়াই এই পুস্তকের কারবার’।
৩৬ বছর বয়সে মারা গেলেও সুকুমার রায় লিখতে শুরু করেছিলেন তোমাদের অনেকের চেয়ে কম বয়সে! যখন তার মাত্র আট বছর বয়স। সেটিও বাংলা ১৩০২ সাল। তার প্রথম লেখা কবিতাটির নাম ‘নদী’। এটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল সেই সময়ের নামকরা ‘শিশু পত্রিকা’য়, যার সম্পাদনা করতেন শিবরাম শাস্ত্রী।
সুকুমার রায়ের বাবা কে ছিলেন তা কী তোমরা জান? শিশুসাহিত্যে রূপকথার সার্থক ব্যবহার করেছেন যিনি, সেই উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী তার বাবা। বাবার অনুপ্রেরণাতেই লেখালেখি শুরু করেন সুকুমার রায়। বাবার অনুপ্রেরণায় তিনি লন্ডন থেকে ফটোগ্রাফি ও প্রিন্টিংয়ের ওপর উচ্চতর ডিগ্রিও নিয়ে আসেন। বাবাকে তা তো জানলে, সুকুমার রায়ের ছেলের নাম কী তোমরা শুনেছো? বাংলা চলচ্চিত্রের গোপী গাইন বাঘা বাইন, ফেলুদাকে তোমরা নিশ্চয়ই চেনো! এই ফেলুদা চলচ্চিত্রের জনক সত্যজিৎ রায় হলেন সুকুমার রায়ের ছেলে।