বার বার একই প্রশ্ন করা হলে এবং তার জবাব দিতে হলে কার ভাল লাগে? কিন্তু ‘ভাই-ই-ই কত হইল-ও-ও?’- বোধহয় শুধু এ প্রশ্নটার উত্তরই অসংখ্যবার হাসিমুখে দিতেও কান্ত হন না কোরবানির আগে গরুর হাট থেকে গরু নিয়ে বুক ফুলিয়ে ফেরা ক্রেতা। কোরবানি ঈদের আসল মজা শুরুই হয় আসলে গরু, ছাগল কেনা এবং কোরবানির হাটে যাওয়ার মধ্যে।
বড়দের জন্য ঈদুল আজহা বাড়তি অনেক কাজের ঝামেলা নিয়ে এলেও ছোটদের আনন্দে কমতি নেই। পশুর হাট আর কোরবানি তাদের জন্য নিয়ে আসে বাড়তি আনন্দের উপলক্ষ।
কোরবানির ঈদকে পুরোপুরি উপভোগের এখানে সেরকম কিছু বুদ্ধি আমরা পাকাতে পারি ।
রোজার ঈদে চাঁদ রাতের মূল মজা হচ্ছে চাঁদ দেখা এবং আতশবাজি ফোটানো। কোরবানির ঈদে চাঁদ দেখার বিষয়টি না থাকলেও আছে কোরবানির পশু নিয়ে নানা ধরনের উত্তেজনা। বাবা-চাচা আর বড় ভাইয়ের সঙ্গে লেগে থাকা গরুর হাটে যাওয়ার জন্য। কোরবানি ঈদের সত্যিকার মজাটা শুরু হবে তখনই। তবে একটু সাবধানে বড়দের কাছাকাছি থেকো, হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
- কোরবানির পশুটি কেনার সময় ঘুরে ঘুরে পছন্দ করা, দরদাম করা এবং বাড়িতে নিয়ে আসা পর্যন্ত যে উত্তেজনা, তার কোনো তুলনা হয় না। আর শেষ পর্যন্ত পছন্দমত পশুটি কিনে বাড়িতে নিয়ে আসার পর যেন শুরু হয নতুন এক উত্তেজনা। এসময় তোমরা বড়দের পাশাপাশি থেকে গরু বা ছাগলকে খাবার দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে তাদের যত্ন-আত্তি করতে পারো। দেখবে ঈদের আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যাবে। তবে গরুটি যদি একটু রাগি হয়ে থাকে, তাহলে বেশি কাছাকাছি না যাওয়াই ভাল। আশেপাশে থাকলেও দেখবে তুমি খুব মজা পাচ্ছো।
- তুমি যে বয়সেরই হও না কেন, ঈদের নামাজ যেন মিস না হয়। নামাজ শেষে পরিচিত-অপিরিচিত সবার সঙ্গে কোলাকুলি করার মধ্যে যে আনন্দ তাছাড়া ঈদ কি সম্পূর্ণ হয়?
- নামাজের পর বাড়ি ফিরে বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্য মুরুব্বীদের সালাম করা আর সালামি নেয়া - সে আর বলতে!
- ঈদের দিনটা না হয় কম্পিউটারে গেমস খেলে বা কার্টুন দেখে নষ্ট নাই করলে। অবশ্যই পশুটিকে কোরবানি দেওয়ার সময় সেখানে হাজির থাকো। তবে খুব কাছাকাছি না থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ, কি বলো? আর যদি শক্তি-সামর্থ্য হয়েই থাকে তবে অবশ্যই হাত লাগাও বাকিদের সঙ্গে। খেলায় নেমে পড়া আর মাঠের বাইরে থেকে খেলা দেখা কি এক হ’ল?
- কোরবানির পর বড়রা মাংস কাটা এবং ভাগাভাগিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ভাবছো একঘেয়ে লাগবে? থেকেই দেখো না। যদি না থাকো, তাহলে তোমার ঈদের আনন্দটাই মাটি! তবে মাংস কাটায় তুমিও যোগ দিলে গায়ের পাঞ্জাবিটা বদলে ঘরের কোনো কাপড় পরে নিও।
- আত্মীয়-পরিজন, প্রতিবেশীদের মাংস বিলাতে যাও। তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ও হলো, বেড়ানোও হলো।
- ঈদের দিন দুপুরে আর কোথাও নয়, কিছু নয়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করো। পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদের দিন সময় কাটানোর কোনো তুলনা নেই।
- এর পরের সারা দিনটি রাখো তোমার বন্ধুদের জন্য। ঘরে বসে সময় নষ্ট না করে বেরিয়ে পড়ো বন্ধুদের সঙ্গে। আর পথঘাটে যে সাবধানে তুমি চলোই তাতো আমি জানিই।
- রাতে অধিকাংশ সময়ই আত্মীয়র বাড়িতে দাওয়াত থাকে। এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা না করে চলে যাও। এতে যারা দাওয়াত দিয়েছেন তারা তোমাকে দেখে যে আনন্দ পাবে, দেখবে তা তোমার ঈদের আনন্দকেও বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে।
- আর কোথাও দাওয়াত না থাকলে অবশ্যই পরিবারের সঙ্গে রাতের খাবারটিও খাওয়ার চেষ্টা করো এবং সবার সঙ্গে টেলিভিশনে বাংলা চ্যানেলে আয়োজন করা বিভিন্ন ঈদ অনুষ্ঠান দেখে হই-হুল্লোড় করে পার করে দাও তোমার ঈদের দিনটি।
বাংলানিউজের ইচ্ছেঘুড়ির পক্ষ থেকে তোমাদের সবাইকে ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।