ডিসেম্বর এলেই বেড়ে যায় জাতীয় পতাকার চাহিদা ও ব্যবহার। এসময় শিশুদের কাছে ছোট ছোট জাতীয় পতাকা আর পতাকা আকৃতির ছোট্ট ব্যান্ডের চাহিদাও অনেক।
ঢাকা থেকে পথে পথে জাতীয় পতাকা বিক্রি করতে করতে ডিসেম্বরের প্রথম দিনে (১ ডিসেম্বর ২০১০) মাগুরায় পৌঁছে ১১ বছর বয়সী লোকমান।
শহরের ভায়নার মোড় এলাকায় এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় কিশোর লোকমানের। লোকমান জানায়, ঢাকার মাদারটেক এলাকায় তাদের বাড়ি। গত ৪ বছর ধরে সে এ পেশার সঙ্গে জড়িত। দ্বিতীয় শ্রেণী পাশ করার পর অভাব অনটনের কারণে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি লোকমানের। মাদারটেক এলাকার পতাকা তৈরির মহাজন আবুল হোসেনের প্রতিষ্ঠান থেকে পতাকা, ব্যান্ড সংগ্রহ করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতে করেতে সে চলে এসেছে মাগুরায়। মাত্র ১৫শ টাকা বেতনে এভাবে সারাদেশে ঘুরে ঘুরে পতাকা বিক্রি করাই এখন তার পেশা। নিজে শিশু বলে শিশুদের উপযোগী প্লাস্টিকের দন্ড ও কাপড়ে তৈরি এ ছোট ছোট পতাকা এবং ব্যান্ড বিক্রিতে তার কাছেই বেশি ক্রেতা আসে।
রাত হলে কোথায় থাকা হয়? জানতে চাইলে সে বলে, ‘যেখানে রাইত সেইখানেই কাইত। থাকনের জন্যে মসজিদই আমার বেশি ভালা লাগে। তয় অনেক সময় বাসস্টান্ডের বেঞ্চিতেই রাইত কাটায়া দেই। গরীবের আবার বিছনা তোষক। ’
লোকমান জানায়, বাবা-মা, দুই ভাই ও তিন বোন নিয়ে তাদের সংসার। বোনেদের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তাদের সংসারে সদস্য সংখ্যা এখন পাঁচ। বাবা ও বড় ভাইয়ের দিনমজুরীতে গোটা সংসার চলে না। এ কারণে ৪ বছর আগে আবুল হোসেনের প্রতিষ্ঠানে এই পতাকা বিক্রির কাজ নিয়েছে সে। গত ৩ বছর ধরে লোকমান ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকাতে পতাকা বিক্রি করছে।