ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

প্রাণী জগতের সেরা বাবা

আবু তালহা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৮ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৩
প্রাণী জগতের সেরা বাবা

ঢাকা: কৈশরে মা মারা যাওয়া আমেরিকার ডড বোঝেনি মায়ের অভাব। বোঝেনি বললে ভুল হবে, বুঝতে দেয়নি তার বাবা।

সব ভাইবোনকে স্নেহ-ভালোবাসায় আগলে রেখে বড় করেছিলেন। যৌবনে ডড বাবাকে ভালোবাসা জানানোর বিশেষ দিন খোঁজার চেষ্ট‍া করেন ‘মা দিবসের মতো’। তার এ চেষ্টা একসময় দেখে আলোর মুখ। ১৯১০ সালে বাবাকে ভালোবাসা জানিয়ে প্রথমবার পালন করা হয় বিশ্ব বাবা দিবস।

মানুষের মতো প্রাণী জগতেও রয়েছে পিতৃত্ব। শুনতে অবাক লাগলেও এ কথা সত্য, কিছু কিছু প্রাণী রয়েছে যারা খুবই দায়িত্বের সঙ্গে সন্তানের প্রতি তার কর্তব্য পালন করে। যেমন পেঁচামুখো বাঁদর। পুরুষ হওয়া স্বত্ত্বেও তারা সন্তানের প্রতি অধিকাংশ দায়িত্ব পালন করে থাকে। দক্ষিণ আমেরিকান এই বাঁদর একই সঙ্গীর সঙ্গে সারা জীবন কাটায় এবং তাদের সন্তানের প্রতি সারা জীবন দায়িত্বশীল আচরণ করে।

সী-হর্স মাছ। ভাবতে অবাক লাগলেও পুরুষ মাছই গর্ভধারণ করে। প্রায় ১০ থেকে ২৫ দিন পরে প্রায় ‍দু’ হাজারের বেশি সন্তান জন্ম দেয় হর্স। লেজে নিয়ে ঘুরে বেড়ায় সন্তানদের।

নামাকা স্যান্ডগ্রুস। পুরুষ পাখিটি প্রথমে একটি গর্তে জমা পানি খুঁজে বের করে এবং তার পেটের পালক ভেজায়। কারণ পেটের পালকে শরীরের অন্য অংশের তুলনায় বেশি পানি ধরে। প্রায় ৪০ মিলিলিটারের বেশি পানি নিয়ে বাসায় ফিরে এসে সন্তানদের ডেকে পালক মেলে দেয়। সন্তানরা তার পেটের পালক থেকে পানি পান করে। কখনও কখনও ১০ মিনিটের বেশি সময় ধরে তারা পান করে পানি।

জেইন্ট ওয়াটার বাগ। এই হিংস্র পোকাদের মিলনের একটি নির্দিষ্ট সময় পরে পুরুষ পোকার পিঠে প্রাকৃতিক আঠা দিয়ে ডিম লাগিয়ে দেয় নারী পোকা। পরবর্তী তিন সপ্তাহ এই ডিম যত্নসহকারে রক্ষা করে।

কালো গলার হাঁস। পুরুষ হাঁসের পিঠে ঘুরে বেড়ায় শিশু হাঁস। জন্মের পর থেকে প্রায় এক বছর তারা পিতা-মাতার কাছাকাছিই থাকে।

মারমোস্ট। পুরুষ মারমোস্ট সন্তানের দেখাশোনা একটু বেশিই করে। কারণ’ সন্তানের ওজন। নারী মারমোস্ট প্রায় ৫৫ কিলোগ্রাম ওজনের বাচ্চা জন্ম দেয়। যদিও আমাদের আশেপাশে দেখা যায় নারীরাই কেবল সন্তানের পরিচর্যা করে।

উটপাখি। নারী পাখিরা সাধারণত সন্তানের দেখাশোনা করলেও দক্ষিণ আমেরিকার উটপাখির ক্ষেত্রে বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন। নারী উটপাখি ডিম পাড়ার পরে পুরুষ উটপাখি কঠোরভাবে পাহারা দেয়। এমনকি কোনো নারী উটপাখিও ডিমের আশেপাশে এলে তার উপর চড়াও হয়। সন্তান উৎপাদনের ক্ষেত্রে নারীর অবদান দেখেই তাদের ভেতর এই দায়িত্ববোধ সৃষ্টি হয় বলে ধারণা করা হয়।

বারকিং ফ্রগ। গলার জন্য এই ব্যাঙের নাম বারকিং ফ্রগ রাখা হয়েছে। এই ব্যাঙ কয়েক সপ্তাহ ডিম পাহারা দেয় এবং ডিম শুকিয়ে যেতে লাগলে তার প্রস্রাব দিয়ে ভিজিয়ে রাখে।

তেলাপোকা। তেলাপোকার অনেক দোষ থাকতে পারে কিন্তু তাদের খারাপ বাবা বলা যায় না। কাঠ খেঁকো এই তেলাপোকা খুবই দায়িত্বশীল বাবা। এরা মৃত তেলাপোকাও পরিস্কার করে তার পরিবারকে সংক্রামক থেকে বাঁচাতে।

ইমপেরিয়র পেঙ্গুইন। এই পাখি তীব্র ঠাণ্ডা সহ্য করে তার সন্তানের জন্য। এমনকি প্রায় চার মাস পুরুষ পেঙ্গুইন নারীর সঙ্গে সন্তানের পরিচর্যা করে। দূরে কোথাও যায় না।     

সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের ভালোবাসা চিরন্তন। সে ভালোবাসা কখনও ফুরোয় না। সে মানুষই হোক, আর হোক কোনো প্রাণী।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৫ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৩
সম্পাদনা: আসিফ আজিজ, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।