বাংলা নববর্ষ। বাঙালির প্রাণের উৎসব।
তুমিও নিশ্চয়ই অনেক আনন্দ করে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করো? কিন্তু কখনো কী ভেবে দেখেছ, কীভাবে এল বাংলা নববর্ষ? কেনই বা পহেলা বৈশাখ নববর্ষ হলো?
আসলে সম্রাট আকবরের আমল থেকে পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ হিসেবে পালিত হচ্ছে। সেসময় সম্রাট খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। প্রাচীন কিছু বর্ষপঞ্জিকার সাহায্যে তৈরি করা হয় বাংলা বর্ষপঞ্জিকা। আকবরের আমল থেকেই চৈত্র মাসের শেষদিনের মধ্যে খাজনা দিতে হতো। এর পরদিন জমির মালিকেরা নিজেদের এলাকার অধিবাসীদের মিষ্টি খাওয়াতেন।
এছাড়াও ব্যবসায়ীরা ‘হালখাতা’ পালন করত, অর্থাৎ নতুন হিসেবের খাতা খুলত। তখন মূলত হালখাতারই উৎসব ছিল পহেলা বৈশাখ। এরপর ধীরে ধীরে নানা সংস্কার ও সংযোজনের পর বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হয় এটি।
এখন কিন্তু বাংলা একাডেমি পহেলা বৈশাখের দিন নির্ধারণ করে দিয়েছে। আগে দু-একদিন আগে পরে হলেও এখন ইংরেজি বর্ষের ১৪ এপ্রিল বাংলা বছর শুরু হয়।
বর্তমানে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলা নববর্ষ পালন করি। বৈশাখের প্রথম দিনে ভোরে উঠেই পান্তা ভাতের সঙ্গে ইলিশ খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে বাঙালির। এছাড়া পহেলা বৈশাখে বাঙালি মেয়েদের মধ্যে লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পরার রীতি আছে। এখন অবশ্য সবাই লাল-সাদা পোশাক পরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করে।
পহেলা বৈশাখে নিজের মতো করে বরণ করে নেয় বৈশাখ মাসকে, নতুন বছরকে। কেউ সেজেগুজে রমনা বটমূলে যায়, কেউবা হাজির হয় বৈশাখী মেলায়। এছাড়া নববর্ষে আরো অনেক জায়গায় ঘুরতে যায় মানুষ। আয়োজন করা হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। খুব সকালে সূর্য ওঠার পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। আরো অনেক আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় বাঙালির প্রাণের উৎসব।
আজ আবার এক বছর পর দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে পহেলা বৈশাখ, এসেছে নতুন বছর ১৪২১। সবার সঙ্গে তুমিও অনেক আনন্দে নতুন বছরকে বরণ করে নাও, ১৪২১ তোমার জন্য অনেক সাফল্য, আনন্দ আর সৌভাগ্য বয়ে আনুক। শুভ নববর্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩