ধরো তুমি হেঁটে যাচ্ছ। হঠাৎ চোখে পড়ল তোমার সামনেই বিশাল এক বন।
সত্যিই কিন্তু এমন একটা পাথরের বন আছে বিশ্বে। এখন তুমি বলতেই পারো, গাছ না থাকলে তাকে আবার বন বলে নাকী? তেমনটা মনে হলে তুমি একে পাথরের রাজ্য বা পাথর রাজ্য, চাইলে পাথরের দেশও বলতে পারো। কিন্তু এর নামটা আসলে ‘স্টোন ফরেস্ট’, অর্থাৎ পাথরের বন।
বিস্ময়কর এই বনটির অবস্থান চীনের ইউনান প্রদেশের কুনমিং শহর থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে। সেখানে সারি ধরে গাছের মতোই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য পাথর। আর এই পাথরগুলোকে দেখলে অনেকটা গাছের মতোই লাগে। তবে এটা ঠিক, গাছের রং সবুজ হওয়ার কথা। এই পাথরগুলোর রং সবুজও নয়, এদের গায়ে কোনো পাতাও নেই। বরং পাথরের গা কারুকার্যখচিত। দেখে মনে হয় অনেকগুলো স্তম্ভ কেউ একসঙ্গে বানিয়ে রেখে দিয়েছে।
কী ভাবছ? এটা চীনাদের বুদ্ধি? ওরা এই সুন্দর পাথর-বন তৈরি করেছে? যদি তা ভেবেই থাকো, তবে তুমি ভুল ভেবেছ।
আসলে এগুলো প্রাকৃতিকভাবেই সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ভূ-তত্ত্ববিদদের ব্যাখ্যা হচ্ছে এই, পাথরগুলো অনেক অনেক আগের। কত আগের জানো? প্রায় ২৭ কোটি বছর আগের! তবে অনেক অনেক আগে এই পাথরগুলো কিন্তু আজকের মতো ছিল না। এগুলো তখন সমুদ্রের নিচে ছিল বলে ধারণা করা হয়। বহু বছর ধরে সমুদ্রের ঢেউ ওদের গায়ে এসে আঘাত করেছে। সে আঘাতেই ওদের গায়ে এমন প্রাকৃতিক নকশা তৈরি হয়েছে। এরপর চীনের এই অঞ্চলে ভৌগোলিক পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানি কমতে থাকে। এভাবে পানি কমতে কমতেই এক পর্যায়ে বেরিয়ে আসে বছরের পর বছর ধরে নিজেদের আড়াল করে রাখা পাথরগুলো।
আর তারপর?
তারপর মানুষের কাছে এক বিস্ময়কর সৃষ্টি হয়েই এখন পর্যন্ত আনন্দে সময় কাটাচ্ছে স্টোন ফরেস্টের পাথরগুলো।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৪