এক দেশে ছিল এক রাজা। রাজার ছিল সব অদ্ভুত ইচ্ছা।
রাজা তার কন্যাকে বাজি রেখে ঘোষণা দেন, যে লোক বলতে পারবে এ চামড়া কোন প্রাণীর— তার সাথেই রাজকন্যার বিয়ে হবে।
বাজি জিতে রাজকন্যাকে বিয়ে করতে অনেক দুর দূরান্ত থেকে লোকজন রাজবাড়ি আসতে থাকে। কিন্তু কেউই সঠিকভাবে অনুমান করে বলতে পারে না, এটা কোন প্রাণীর চামড়া। একসময় একটি নির্দয় কদাকার মানুষখেকো রাক্ষসও নিজের ভাগ্য পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়ে এসে হাজির হয় রাজদরবারে। অতঃপর চামড়ার গন্ধ শুকে খুব সহজেই বলে দেয়, এটা আর কিছু নয়, মাছির চামড়া।
রাজা তো পড়ে গেলেন মহা সমস্যায়। রাজা মানুষ, একবার কথা দিয়ে ফেলেছেন, এবার তা তো রাখতেই হবে।
রাজা তার কথা রাখলেন। তিনি নিজের সকল কষ্ট চেপে রেখে রাজকন্যাকে নিষ্ঠুর সেই রাক্ষসের হাতে তুলে দিতে প্রস্তুত করলেন। রাজকন্যা রাজার কাছে খুব কাকুতি-মিনতি করলেও রাজা শুনলেন না মেয়ের কথা। রাজা তাকে ‘আমার বোকামির নিঃশ্বাস’ সম্বোধন করে পাঠিয়ে দিলেন রাক্ষসের কাছে। তিনি রাজকন্যাকে সাবধান করে দিলেন এই বলে যে, যদি সে রাক্ষসকে বিয়ে করতে রাজি না হয়, তবে তার শরীরের একটা হাড়ও অক্ষত থাকবে না।
রাজকুমারী মানুষের কংকালে তৈরি তার নতুন ঘর দেখে খুবি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। রাক্ষস স্বামী তাকে মৃতদেহের ভোজ উৎসবে আমন্ত্রণ জানালে সে আরও বেশি ভয় পেয়ে যায়। সে বারবার বমি করতে থাকে। রেগে গিয়ে রাক্ষস তখন প্রতিজ্ঞা করে যে, যতক্ষণ রাজকন্যা মানুষের মাংস খেতে আপত্তি করবে ততক্ষণ সে তাকে জোর করে শুকরের মাংস খাওয়াবে।
রাক্ষস শিকারে বেরিয়ে গেলে এক বৃদ্ধা রাজকুমারীর তীব্র হাহাকার শুনতে পায়। রাজকুমারীকে উদ্ধার করে আনতে তিনি তার জাদুবিদ্যায় পারদর্শী সাত ছেলেকে পাঠান রাক্ষসের ঘরে। ইতোমধ্যে রাক্ষসটিও ফিরে আসে।
বৃদ্ধার সাত ছেলে প্রথমে রাক্ষসের চোখের মণিতে আঘাত করে। তারপর তার দেহ থেকে মাথা ছিন্নভিন্ন করে অবশেষে সেই নিষ্ঠুর রাক্ষসটিকে পরাজিত করে দেয়। রাজকন্যাকে উদ্ধার করে তারা তার বাবার কাছে নিয়ে আসে। বিস্ময়ে অভিভূত রাজা রাজকন্যাকে নিরাপদে রাজপ্রাসাদে ফিরে আসতে দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান। (সংক্ষেপিত)
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১৪