অন্ধকার রাত। মারুফ হোসেন তার মোটর সাইকেল চড়ে বাড়ি ফিরছেন।
- জ্বি আপনি কে? এত রাতে...
- আমি থানা থেকে এসেছি। দ্বিতীয় তলায় মনে হচ্ছে কোন বিপদ হয়েছে। তাই সেটা দেখতে চাচ্ছি।
দারোয়ান ঘুমের ঘোরে কিছু না বুঝেই মারুফকে যেতে দিলো।
দ্বিতীয় তলায় উঠে দরজায় নক করলেন মারুফ। অনেকক্ষণ নক করার পর একটি মেয়ের কণ্ঠস্বও শোনা গেলো। মনে হচ্ছে বাসার কাজের মেয়ে।
- কে?
- আমি থানা থেকে এসেছি।
- কী চান?
- তোমাদের বাসা থেকে মনে হচ্ছে কেউ চিৎকার করছে। কেউ কি বিপদে পড়েছে?
- না তো, কেউ তো বিপদে পড়ে নাই!
মেয়েটি দরজা খুলে দিলো।
- খাড়ান, ভাই আর আপারে ডাইকা আনি। এই বলে মেয়েটি ভেতরে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর এক দম্পতি বের হয়ে এলো। লোকটি বলে উঠলো—
- আসসালামওয়ালাইকুম। কাকে চাইছেন?
- ওয়ালাইকুমআসসালাম। আমি একজন পুলিশ অফিসার। আপনাদের বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হলো একটি নারী কণ্ঠের চিৎকার শুনলাম। তাই আমি জানতে এসেছি যে কোনো সমস্যা কিনা।
- ও আচ্ছা, অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু আমাদের বাসায় তো কোনো সমস্যা হয়নি!
ঠিক তখনই চিৎকারটা আবার হলো। তখনই মারুফ বলে উঠলেন—
- এই যে চিৎকার। আপনাদের বাসায়ই তো!
হঠাৎ লোকটি হেসে উঠলেন।
- আমি দুঃখিত। এটা আসলে আমাদের পোষা একটি পাখি!
- কী? প্রচণ্ড অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন মারুফ।
- হ্যাঁ। এই বলে লোকটি বাসার ভিতরে চলে গেলেন।
কিছুক্ষণ পর ফিরে আসলেন হাতে একটি খাঁচা নিয়ে। খাঁচায় একটি খুব সুন্দর তোতা পাখি। নীল আর কমলা রঙের মিশেল পাখিটির গায়ে। লোকটি বললো—
- এটা হচ্ছে ম্যাকাও। একজাতীয় তোতা। এটার ডাক আসলেই একটু চিৎকারের মতো শোনায়। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ যে আপনি আমাদের বিপদ মনে করে আমাদেরকে সাহায্য করতে এসেছেন।
তখনই পাখিটি ডেকে উঠলো। পুরো মেয়ে কণ্ঠের চিৎকার।
মারুফ হোসেন তো এখনো বিশ্বাসই করতে পারছেন না!
চান্দ্রেয়ী পাল মম
দশম শ্রেণী
ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ
বসুন্ধরা শাখা, ঢাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৪