ডুবুরিদের আমরা সবাই চিনি। অক্সিজেন মাস্ক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সঙ্গে নিয়ে পানির নিচে কোনোকিছুর খোঁজে যান তারা।
এরকম মৎস্যকুমারীরা আছেন জাপানে। তাদের বলা হয় অ্যামা ডাইভার। অ্যামা শব্দটির অর্থ সমুদ্রের নারী, বা সমুদ্রকন্যা। অ্যামা ডাইভাররা সবাই নারী। আগে অবশ্য পুরুষরাও অ্যামা ডাইভিং করতেন, এখনো জাপানের কিছু অংশে কোনো কোনো পুরুষ এটি করেন। তবে এখন অ্যামাদের পরিবারের পুরুষেরা বেশিরভাগই দূর-দূরান্তে থাকেন। তারা মূলত সাগরে মাছ ধরেন।
খুব অল্প বয়সে, সাধারণত কৈশোরে অ্যামারা ডুবুরির কাজ শুরু করেন। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হলো, তারা পানির নিচে ৩০ মিটার পর্যন্ত গভীরে যেতে পারেন এবং প্রায় দুই থেকে তিন মিনিট থাকতে পারেন কোনো অক্সিজেন মাস্ক ছাড়াই।
এই নারীরা মূলত মুক্তোর খোঁজে ডাইভ করেন। এছাড়াও শামুক, ঝিনুক ইত্যাদি সংগ্রহ করেন তারা। এভাবেই চলে তাদের জীবিকা নির্বাহ।
একজন অ্যামা ডাইভার প্রতিদিন দু-বারে ডাইভ করেন। দিনের দুটি নির্দিষ্ট সময়ে ঠিক দেড় ঘণ্টার জন্য ডাইভ করেন তারা। প্রতি ডাইভে দু-মিনিট পানির নিচে থাকেন তারা। এভাবে তারা একবারে ৬০টি পর্যন্ত ডাইভ দেন।
অ্যামাদের এই পেশা প্রায় ২০০০ বছরের ঐতিহ্য। এখনো তারা সে ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। তবে অ্যামা ডাইভিং অত্যন্ত কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এছাড়া যুগের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এর প্রয়োজনীয়তাও ফুরিয়ে গেছে। তাই অ্যামাদের অনেকেই এখন শহরে চলে যাচ্ছে অন্য কাজের খোঁজে।
কিন্তু বহু আগে থেকে যারা এ পেশার সঙ্গে জড়িত, তারা এখনো এটি করে চলেছেন। এখন যে অ্যামারা রয়েছেন তাদের বয়স ৫০-৬০ এর মধ্যে। ষাটোর্ধ্ব নারীরাও স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে ডাইভ করেন।
বর্তমানে অ্যামা ডাইভিং বিলুপ্তির পথে। অ্যামাদের বর্তমান প্রজন্ম এ পেশায় না এলে হয়তো কালের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাবে জাপানের সাগরকন্যারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৪